Advertisement
E-Paper

অমাবস্যার কটালে নদীবাঁধে ধস, আতঙ্ক গ্রামে

রবিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের টাকি পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল সৈকতে কাটাখালি নদীর বাঁধে ধস নামে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৫ ০৯:২০
বাসন্তীতো ধসে গিয়েছে হোগল নদীর বাঁধ।

বাসন্তীতো ধসে গিয়েছে হোগল নদীর বাঁধ। নিজস্ব চিত্র।

অমাবস্যার কটালে দুই জেলার একাধিক এলাকায় বাঁধে ধস নেমেছে। আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁধ মেরামতিতে প্রশাসনের ‘গা-ছাড়া মনোভাবের’ জেরেই বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।

রবিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের টাকি পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল সৈকতে কাটাখালি নদীর বাঁধে ধস নামে। প্রায় আড়াইশো ফুট নদীবাঁধ তলিয়ে যায়। নদীপাড়ের বেশ কয়েকটি বাড়ি ও দোকানে ফাটল দেখা দেয়। প্রশাসনের তরফে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের ‘নিরাপদ স্থানে’ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা বলাই মণ্ডল বলেন, “বাঁধের যা অবস্থা, তাতে যে কোনও মুহূর্তে বেশ কয়েকটি বাড়ি ও দোকান নদীর জলে তলিয়ে যেতে পারে।” রত্না গিরি বলেন, “খুব আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। কিছু মানুষ ঘর ছেড়ে খোলা আকাশের নীচে রাস্তার উপরে আশ্রয় নিয়েছেন।” প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানান অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, বাঁধ সংস্কারের জন্য বার বার জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি প্রশাসনিক ভাবে।

টাকির উপ পুরপ্রধান ফারুক গাজি বলেন, “দ্রুত বাঁধ মেরামতির জন্য সেচ দফতরের আধিকারিকদের জানানো হয়েছে। অসহায় মানুষের পাশে আমরা আছি।”

হিঙ্গলগঞ্জের সাহেবখালি পঞ্চায়েতের রমাপুর এলাকায় গত এক মাসে চার বার নদীবাঁধে ধস নেমেছে বলে দাবি এলাকার মানুষের। এ দিন সেখানে বাঁধ পরিদর্শনে যান হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শহিদুল্লা গাজি, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সুরজিৎ বর্মণ। বিধায়ক বলেন, “একশো দিনের কাজ প্রকল্পে নিয়মিত নদীবাঁধ সংস্কার করা হত। সেই টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। ফলে বাঁধ সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। কী ভাবে ভাঙন রোধ করা যায়, সেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।”

অন্য দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর পুরন্দর গ্রামে হোগল নদীর বাঁধে তিনশো ফুটের বেশি এলাকা জুড়ে ধস নেমেছে। শনিবার বিকেল থেকেই বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। রবিবার ভোরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ধস নামে। বাঁধের উপরে থাকা বড় বড় গাছও নদীতে তলিয়ে গিয়েছে।

বাসিন্দারা জানান, বার বার এই এলাকায় বাঁধে ধস নামে। শক্তপোক্ত ভাবে বাঁধ মেরামতির কোনও উদ্যোগ করা হয়নি। কংক্রিটের বাঁধের দাবি উঠলেও, তা হয়নি। কোনওমতে বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিশ লস্করের কথায়, “যে ভাবে বাঁধে ধস নেমেছে, তাতে দ্রুত শক্তপোক্ত ভাবে বাঁধ মেরামতি না হলে অদূর ভবিষ্যতে বড়সড় ভাঙন দেখা দেবে। বাঁধ ভাঙলে একের পর এক গ্রাম প্লাবিত হবে।” আর এক বাসিন্দা শান্তি শিকদার বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে বাঁধে কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। অমাবস্যা, পূর্ণিমার কটালে নদীতে জল বাড়লে এ রকম ধস নামছে। কোথাও কোথাও বাঁধ ভেঙে গ্রামে জলও ঢুকছে। বর্ষা বা ঘূর্ণিঝড়ের মরসুমে যে কী হবে, ভেবেই আমরা আতঙ্কিত!”

বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে। যেখানে যেখানে দুর্বল নদীবাঁধ রয়েছে, সেগুলিও মেরামতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

basanti Hasnabad River Erosion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy