E-Paper

পর্যটনে গতি আসবে, মনে করছেন গোবরডাঙার মানুষ

শহরের বাসিন্দা, নাট্য পরিচালক আশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, "গোবরডাঙার একটা স্থান মাহাত্ম্য বরাবরই আছে। হেরিটেজ ঘোষণার আগে থেকেই দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ এখানে আসেন।

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৩০
সম্মান: জোড়া শিবমন্দির ও কঙ্কনা বিনোদন উদ্যান। ছবি: সুজিত দুয়ারি

সম্মান: জোড়া শিবমন্দির ও কঙ্কনা বিনোদন উদ্যান। ছবি: সুজিত দুয়ারি Sourced by the ABP

গোবরডাঙার একাধিক স্থাপত্যকে হেরিটেজ ঘোষণা করেছে রাজ্য হেরিটেজ কমিশন। শহরবাসী মনে করছেন, গোবরডাঙা শহরকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পে আরও গতি আসবে এ বার। তার প্রভাব পড়বে স্থানীয় অর্থনীতিতে। ব্যবসায়ী, যান চালক থেকে সংশ্লিষ্ট সকলেই অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবেন। পর্যটকদের যাতে গোবরডাঙা এসে থাকা-খাওয়া এবং এলাকার স্থাপত্যগুলি ঘুরে দেখতে সমস্যা না হয়, সে জন্য পুরসভার থেকে পরিকাঠামো আরও উন্নত করার পরিকল্পনা করাহয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান শঙ্কর দত্ত।

শহরের বাসিন্দা, নাট্য পরিচালক আশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, "গোবরডাঙার একটা স্থান মাহাত্ম্য বরাবরই আছে। হেরিটেজ ঘোষণার আগে থেকেই দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ এখানে আসেন। দর্শনীয় স্থানগুলি ভ্রমণ করেন। হেরিটেজ ঘোষণার পরে আরও বেশি মানুষ এখানে আসবেন বলে আশা করা যায়। স্থানীয় অর্থনীতিতে এর ভাল প্রভাব পড়বে।" শহরের বাসিন্দা পরিবেশকর্মী মানিক ঘোষের মতে, হেরিটেজ ঘোষণার পরে গোবরডাঙা নিয়ে বাইরের মানুষের আগ্রহ আরও বাড়বে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, টোটো অটো চালক, ভ্যানচালকেরা আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন।" স্কুল শিক্ষিকা দেবযানী গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, "গোবরডাঙার পরিচিতি মূলত নাটক বা থিয়েটারের কারণে। হেরিটেজ ঘোষণা হওয়া বিষয়গুলি নিয়ে মানুষের আগ্রহ থাকে। ফলে মানুষ আরও বেশি করে আসবেন। এখানকার স্থাপত্যের খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে।"

দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে যমুনা নদী, পূর্ব দিকে কঙ্কনা বাওড় ও রত্না খাল, উত্তরে রয়েছে ইছাপুর খাল। কলকাতা থেকে ৫৮ কিলোমিটার দূরে এই শহর। পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, পর্যটকেরা গোবরডাঙায় দু'ভাবে আসতে পারেন। ট্রেনে শিয়ালদহ থেকে গোবরডাঙা স্টেশন। সেখানে নেমে ঘোরার জন্য টোটো-অটো মিলবে। সড়ক পথে কলকাতা থেকে যশোর রোড ধরে হাবড়ার চোংদামোড়। সেখান থেকে ডান দিকে হাবড়া-বসিরহাট সড়ক ধরে গোবরডাঙা শহরে পৌঁছে যাওয়া যায়।

পুরপ্রধান বলেন, "স্থাপত্য ঘুরে দেখার পাশাপাশি গোবরডাঙায় এসে বনভোজনের ব্যবস্থা আছে। পুরসভার পক্ষ থেকে কঙ্কনা বাওড়ের পাশে তৈরি হয়েছে বিনোদন পার্ক। প্রকৃতি এখানে সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছে। বনভোজনের পাশাপাশি রয়েছে বোটিংয়ের ব্যবস্থা। রাতে থাকার ব্যবস্থাও আছে। পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে রাত্রিনিবাসের জন্য ঘর বুকিং করা যাবে।’’

সম্প্রতি রাজ্য হেরিটেজ কমিশন গোবরডাঙার প্রসন্নময়ী কালীমন্দির, চণ্ডীতলা জোড়া শিবমন্দির, সিংহদুয়ার, নহবতখানা এবং গোবরডাঙা খাঁটুরা হাইস্কুলকে হেরিটেজ ঘোষণা করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চণ্ডীতলা জোড়া শিবমন্দির এলাকায় বাওড়ে স্নানের ঘাট আছে। সেটি ভেঙেচুড়ে গিয়েছে। সংস্কার প্রয়োজন। খাঁটুরা হাইস্কুল নতুন ভবন তৈরির প্রয়োজন। এ ছাড়া, বাকিগুলি ভগ্নপ্রায় না হলেও কমবেশি সংস্কার প্রয়োজন।

এ দিকে, শহরের একাধিক স্থাপত্যকে হেরিটেজ ঘোষণার কথা জানাজানি হতেই শহরে একাংশের মানুষের আলোচনায় উঠে এসেছে গোবরডাঙার গ্রামীণ হাসপাতালের প্রসঙ্গ। কয়েক মাস আগে এখানে চিকিৎসা পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শহরের মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি, হাসপাতালটি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল হিসাবে চালু করুক রাজ্য সরকার। এই দাবিতে মানুষ পথে নেমে আন্দোলন করেছেন। কিন্তু দাবি মেটেনি। তা নিয়ে হতাশ শহরবাসী।

হাসপাতাল বাঁচাও কমিটির আহ্বায়ক তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান বাপি ভট্টাচার্য বলেন, "মানুষের দাবি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল। সে জন্য লড়াই করছি। পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।" গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদের সহ সভাপতি পবিত্র মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমরা আশাবাদী, পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল সরকার অবশ্যই চালু করবে। লড়াই করে আমরা তা আদায় করব।"

দিন কয়েক আগে দিদির দূত হয়ে গোবরডাঙায় গিয়েছিলেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস। তাঁর কাছে মানুষ পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের দাবি করেছিলেন। বিশ্বজিৎ বলেন, "বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

World Heritage Sites Gobardanga

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy