E-Paper

বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিপত্তি

স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, জনবহুল এলাকায় উপর দিয়ে তেত্রিশ হাজার ভোল্টের লাইন নেওয়া হয়েছে ২০১৯ সালে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৫ ০৮:৪৬
এই তার ছিঁড়েইই সমস্যা।

এই তার ছিঁড়েইই সমস্যা। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

রাতে রাস্তায় ছিঁড়ে পড়েছিল তেত্রিশ হাজার ভোল্টের লাইনের তার! বিপদ এড়াতে রাত জাগলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, প্রশাসন, পুলিশ, বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে না আসায় এলাকার বাসিন্দাদেরই রাত জেগে যান চালক এবং রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মানুষদের সতর্ক করতে হয়েছে। কারণ, তারে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। বড় বিপদ ঘটতে পারত। এমনিতেই তার ছিঁড়ে বেশ কিছু বাড়িতে টিভি, ফ্রিজ, পাখা বা অন্যান্য বিদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাবড়া বাণীপুরে ইতনা নতুন কলোনি এলাকায়। জনবসতিপূর্ণ ওই এলাকায় তার ছিঁড়ে পড়ার প্রায় দু’ঘণ্টা পরে পুলিশ ও বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন আসেন বলে স্থানীয় মানুষের দাবি। তেত্রিশ হাজার ভোল্টের তার ছিঁড়ে পড়ে ৪৪০ ভোল্টের তারের উপরে। ৪৪০ ভোল্টের লাইন গিয়েছে বাড়ি বাড়ি। তার ফলে বাড়ির জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে বলে জানালেন অনেকে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, জনবহুল এলাকায় উপর দিয়ে তেত্রিশ হাজার ভোল্টের লাইন নেওয়া হয়েছে ২০১৯ সালে। অশোকনগরের বিদ্যুৎ স্টেশনের কাছে থাকা পাওয়ার হাউজ় থেকে হাবড়ার ওই এলাকা হয়ে গৌড়বঙ্গ রোডের গা ঘেঁষে ওই হাই টেনশন লাইন গিয়েছে মগরা এলাকায় পাওয়ার সাব স্টেশনে। অলীক বিশ্বাস নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘রাত দেড়টার পরে এই ঘটনা ঘটলেও বার বার ফোন করা হলেও পুলিশের দেখা মেলেনি। বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনও আসেননি। তাঁরা অনেক পরে আসায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা।’’ রাজা সাহা নামে এক যুবকের কথায়, ‘‘কয়েক মাস আগেও ওই এলাকায় হাইটেনশন তার ছিঁড়ে পড়েছিল। সে বার বিদ্যুৎ বিভাগের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, এ ধরনের বিপদ আর হবে না। যদিও ন’মাসের মাথায় ফের একই ঘটনা ঘটল। আমরা চাই, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ওই বিদ্যুৎ লাইন নিতে হবে মাটির নীচ দিয়ে। না হলে আমরা ছেঁড়া তার জোড়া দিতে দেব না।’’

ঘটনার পর থেকে ওই এলাকার বেশ কিছুটা অংশ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ৩৩ হাজার ভোল্টেজ ওই বিদ্যুতের উপরে মগরা-সহ আশেপাশের এলাকার বেশ কিছু কারখানা চলে। বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় তারাও সমস্যায় পড়েছে। শনিবার ভোরে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা তার মেরামত করতে এলে এলাকার বাসিন্দারা বাধা দেন। মাটির নীচ দিয়ে তার নিতে হবে বলে দাবি করেন। বিদ্যুৎ কর্মীরা ফিরে যান। তবে ছেঁড়া তারে সংযোগ বিচ্ছিন করা হয়েছে।

মুক্তি সাহা নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘তার ছিঁড়ে পড়ার পরে আমরাই রাস্তায় পাহারায় বসি। কিছুক্ষণ পরে শববাহী একটি গাড়ি এসেছিল। অন্য রাস্তা দিয়ে আমরা ঘুরিয়ে দিই। ওই রাস্তা দিয়ে অনেক মানুষ যাতায়াত করেন। আমরা রাত পাহারা না দিলে প্রাণহানি ঘটতে পারত।’’

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়। পুলিশ এবং বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন এলাকায় আসেন। বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাসিন্দাদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাঁদের নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করা হবে। পুলিশ অবশ্য দেরিতে ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। বিদ্যুৎ বিভাগও জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে খবর পাওয়ার পরেই তারা এলাকায় গিয়েছিল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Habra

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy