Advertisement
E-Paper

ডিজে রুখে তারিফ কুড়ল টাকি

পিকনিকে ডিজের দাপট রুখতে এ বার অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল টাকি পুরসভা। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শব্দদানবের অত্যাচার কার্যত রুখে দিয়ে শহরবাসীকে শান্তি দিতে পেরেছে তারা।

নির্মল বসু ও সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩০
ডিজের-দাপট: ক্যানিংয়ের পথে। নিজস্ব চিত্র

ডিজের-দাপট: ক্যানিংয়ের পথে। নিজস্ব চিত্র

সফল টাকি, পারল না ক্যানিং।

পিকনিকে ডিজের দাপট রুখতে এ বার অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল টাকি পুরসভা। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শব্দদানবের অত্যাচার কার্যত রুখে দিয়ে শহরবাসীকে শান্তি দিতে পেরেছে তারা। কিন্তু ক্যানিংয়ের অবস্থা তথৈবচ। পিকনিকের মরসুমে গাড়ি-বোঝাই করে বিশাল বিশাল বক্স নিয়ে পাড়া দাপাতে দাপাতে যাচ্ছে ছেলে-মেয়ের দল। মাঠেঘাটে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে পিকনিকের আসরে তারস্বরে বাজছে ডিজে। সঙ্গে উন্মত্ত নাচ, অশালীন অঙ্গভঙ্গি।

বেশিরভাগ পিকনিক স্পটেই শীতের মরসুমে গত কয়েক বছর ধরে বেড়েছে ডিজের দাপট। কী জাদুতে তা রুখে দিতে পারল টাকি?

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পিকনিক করতে এসে ডিজে বাজানো যাবে না— এই মর্মে কড়া বার্তা দিয়েছিল টাকি পুরসভা। সেই মতোই কাজ করেছে পুলিশ। ডিজে নিয়ে পিকনিক করতে আসা গাড়ি দেখলেই টাকিতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। সহজ সমাধান সূত্র মিলেছে তাতেই।

বাসিন্দারা জানালেন, প্রত্যেক বছরই ভয়ানক জোরে বক্স, ডিজের দাপট, সঙ্গে উদ্দাম নাচনকোঁদনের সাক্ষী থাকে টাকি এবং আশেপাশের পিকনিক স্পটগুলি। সামনে ছেলেমেয়েদের বার্ষিক পরীক্ষা থাকে। পড়াশোনার খুবই অসুবিধা হয় সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত। অসুস্থ মানুষদের সমস্যা আরও প্রকট। কিন্তু এ বার ছবিটা অনেকাংশে বদলেছে।

টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেকেই আসছেন। কিন্তু ডিজে বাজাতে দেওয়া হবে না বলে তাঁরা ইছামতীর ধার ছেড়ে গ্রামের দিকে চলে যাচ্ছেন। সেখানেও ডিজে বাজানো উচিত নয়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, কড়া নজর রাখা হয়েছে। শহর কিংবা গ্রাম, যেখানেই ডিজে বাজিয়ে পিকনিক হবে, সেখানেই কড়া পদক্ষেপ করা হবে।

তবে টাকির ব্যবসায়ীদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রশাসনের এই কড়াকড়িতে ভিড় কিছুটা কমেছে। যা আখেরে আর্থিক ক্ষতি ডেকে আনছে পর্যটন শহর টাকিতে। যদিও স্থানীয় মানুষের বড় অংশই শব্দদানবের তাণ্ডব কমায় খুশি।

ছবিটা অবশ্য বদলায়নি ক্যানিং মহকুমায়। ডাবু, ঝড়খালি, গোসাবার বিভিন্ন জায়গায় যথারীতি পিকনিকের মরসুমে উপচে পড়ছে ভিড়। ক্যানিং-বারুইপুর রোড, বাসন্তী হাইওয়ের উপর দিয়ে পিকনিকের দলগুলি ডিজে বাজিয়ে নাচানাচি করতে করতেই যাতায়াত করছে। এ সবের জেরে প্রতি বছরের মতোই নাজেহাল ক্যানিং মহকুমার বহু মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, সব দেখেশুনেও নড়ে বসছে না প্রশাসন। হাসপাতালগুলির সামনে দিয়েও ডিজে বাজিয়ে হুশ হুশ করে বেরিয়ে যাচ্ছে গাড়ি। বিকট সব শব্দে কান ঝালাপালা অসুস্থ রোগীদেরও।

ক্যানিং হাসপাতালের এক কর্মী বলেন, ‘‘যে ভাবে ডিজে বাজছে, তাতে আমাদেরই কান ঝালাপালা হয়ে যাওয়ার জোগাড়। অসুস্থ বয়স্ক মানুষ, রোগী, সদ্যোজাতদের কী অবস্থা হচ্ছে, সহজেই বোঝা যায়।’’ হাসপাতাল চত্বরের সামনে এমনিতেই গাড়ির হর্ন বাজানো নিষেধ। সেখানে কী ভাবে ডিজে বাজিয়ে গাড়ি চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক আহম্মেদ সর্দার বলেন, ‘‘বৃদ্ধা মা বাড়িতে। একবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি জোরাল শব্দে চমকে চমকে উঠছেন। চিকিংসকরা সাবধানে থাকতে বলেছেন। কিন্তু পিকনিকের মরসুমা না গেলে মায়ের খুব কষ্ট।’’

মহকুমা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা এ বিষয়ে যথেষ্ট তৎপর। সমস্ত পিকনিক স্পটগুলিতে নজর রাখছি। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে পুলিশের বুথ করে গাড়ির গতি লক্ষ্য রাখার পাশাপাশি ডিজে বাজাতে নিষেধ করা হচ্ছে।’’ এ পর্যন্ত কয়েকটি গাড়ি আটক করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Loud Speaker Taki Canning Picnic
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy