Advertisement
E-Paper

বধূর দেহ ফেলে পলাতক স্বামী

দু’পক্ষের অভিযোগ নিয়ে শুক্রবার রাত এগারোটা পর্যন্ত এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যদের উপস্থিতিতে সালিশি সভা হয়। নাসিমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কথা দেন, তাঁর উপরে আর অত্যাচার করা হবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০২:৩১
নাসিমা খাতুন

নাসিমা খাতুন

পারিবারিক অশান্তি মেটাতে সালিশি সভা বসানো হয়েছিল চার বার। তার পরেও অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক গৃহবধূর। ঘটনাটি ঘটতেই শনিবার চাঞ্চল্য ছড়াল দেগঙ্গায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম নাসিমা খাতুন (২২)। মৃতার পরিবারের দাবি, স্বামীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় নাসিমাকে খুন করা হয়েছে। তাদের তরফে পণের জন্য নাসিমার উপরে অত্যাচার করার অভিযোগ ছিল আগেই। তাঁর শ্বশুরবাড়ির ন’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তেরা পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, সাড়ে চার বছর আগে দেগঙ্গার ঘোষালের আবাদের বাসিন্দা, মাছ ব্যবসায়ী রশিদ মণ্ডলের ছোট মেয়ে নাসিমার বিয়ে হয় গাম্ভীরগাছির মাছ ব্যবসায়ী রাসেদ মণ্ডলের সঙ্গে। তাঁদের একটি দেড় বছরের মেয়েও আছে। নাসিমার বাবা রশিদের দাবি, চাহিদামতো টাকা ও সোনার গয়না দিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তার পরেও আরও টাকার দাবিতে মেয়ের উপরে মারধর করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তিনি বলেন, “মেয়ের কথা ভেবেই জামাইকে আড়াই লক্ষ টাকা দিয়ে পাকা বাড়ি, আসবাবপত্র ও সংসারের যাবতীয় জিনিস কিনে দিই। এত কিছুর পরেও মেয়ের কাছে জানতে পারি, জামাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে!’’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দু’পক্ষের অভিযোগ নিয়ে শুক্রবার রাত এগারোটা পর্যন্ত এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যদের উপস্থিতিতে সালিশি সভা হয়। নাসিমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কথা দেন, তাঁর উপরে আর অত্যাচার করা হবে না। রশিদ বলেন, “সেই মতো রাতেই আমরা বাড়ি ফিরে আসি। ভোরে খবর আসে, মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে।’’ নাসিমার মা গোলাপজান বিবি এ দিন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “মেয়ের উপরে আর অত্যাচার হবে না বলে কথা দিয়েছিল জামাই ও তার বাড়ির লোকেরা। তার পরেও আমার মেয়ে গলায় দড়ি দেবে কেন? ওরাই মেয়েকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে। ওদের কঠিন শাস্তি হোক।’’

খবর পেয়ে নাসিমার পরিজনেরা গাম্ভীরগাছিতে গিয়ে দেখেন, দেহ পড়ে রয়েছে বাড়ির সামনে। শ্বশুরবাড়ির সবাই পলাতক। পুলিশ গিয়ে দেহটি নিয়ে যায় বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। পরে দেহ ময়না-তদন্তের জন্য বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

শুক্রবার সালিশি সভায় গিয়েছিলেন দেগঙ্গা থানার পুলিশকর্মী সাবিনা ইয়াসমিনও। মৃত নাসিমা সম্পর্কে তাঁর ভাগ্নি। শনিবার সাবিনা বলেন, “বিয়ের পর থেকে মেয়েটাকে মারধর করত রাসেদ। সালিশিতে পঞ্চায়েত সদস্যেরা উপস্থিত থেকে বিচার করার পরেও ভাগ্নির এমন মৃত্যু, মেনে নেওয়া যায় না।’’ স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আবু তালেব বলেন, “বিষয়টি নিয়ে এক বার নয়, চার বার সালিশি হয়েছে! ছেলের বাড়ির লোকেরা ওই রাতে কথা দিয়েছিল, মেয়েটার উপরে আর অত্যাচার করবে না। মেয়েটি মারা যাওয়ার পিছনে কারা রয়েছে, সেটা পুলিশ তদন্ত করে বার করুক এবং ওদের কড়া শাস্তি দিক।’’

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

Crime Death Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy