Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Gangasagar Mela

থাকার জায়গা না পেয়ে সৈকতেই রাত কাটছে ওঁদের

বৃহস্পতি-শুক্রবার রাতে সমুদ্রতটের ৩-৫ নম্বর স্নানঘাটে গিয়ে দেখা গেল, গোটা চত্বর জুড়ে হাজারখানেক পুণ্যার্থী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। কনকনে ঠান্ডায় রাত কাটানোর প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

মাথা-গুঁজে: অনেককে টাকা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

মাথা-গুঁজে: অনেককে টাকা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

সমরেশ মণ্ডল
গঙ্গাসাগর শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:১৩
Share: Save:

জেলা প্রশাসনের দাবি, গঙ্গাসাগর মেলা চত্বরে পর্যাপ্ত সংখ্যায় যাত্রিনিবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ, প্রায় হাজারখানেক তীর্থযাত্রী থাকার জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়ে সমুদ্র সৈকতে রাত কাটাচ্ছেন বলে অভিয়োগ উঠছে। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে গজিয়ে উঠেছে দালালচক্র। তারা তীর্থযাত্রীদের থেকে ৩-৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সৈকত লাগোয়া চত্বরে অস্থায়ী ভাবে থাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে বলে জানা গেল।

বৃহস্পতি-শুক্রবার রাতে সমুদ্রতটের ৩-৫ নম্বর স্নানঘাটে গিয়ে দেখা গেল, গোটা চত্বর জুড়ে হাজারখানেক পুণ্যার্থী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। কনকনে ঠান্ডায় রাত কাটানোর প্রস্তুতি শুরু করেছেন। ৩ নম্বর সমুদ্রতটের কাছে পৌঁছে দেখা গেল, একটা ত্রিপল টাঙিয়ে জনা দশেক রাতটা কাটাবেন। এটুকু আস্তানার জন্য ২-৩ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। কাকে দিয়েছেন টাকা? পুণ্যার্থীরা জানালেন, স্থানীয় কেউ কেউ এ কাজে নেমে পড়েছেন বলে জানতে পেরেছেন তাঁরা। ওই যুবকেরাই তাঁবুর ব্যবস্থা করেছেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, জায়গা ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ যায়। এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, মেলা চত্বরে বিদ্যুৎ সংযোগের অস্থায়ী ট্রান্সফর্মারের পাশে দোকান দেওয়ার নাম করে অনেকে জায়গা নিয়েছেন। কিন্তু দোকান না করে সেখানে বেআইনি ভাবে ত্রিপল টাঙিয়ে যাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন।

সে রকম একটি অস্থায়ী ত্রিপলের নীচে বৃহস্পতিবার রাত কাটিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর থেকে আসা গীতাদেবী। তাঁর সঙ্গে এসেছেন আরও পাঁচ জন। শুক্রবার সকালে গীতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মেলার কোথাও থাকার জায়গা না পেয়ে এখানেই আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। বললেন, ‘‘সামনে একটি কেরোসিনের দোকান থেকে এক ব্যক্তি এসে এখানে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এখানে দু’রাত থাকার জন্য ৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।’’

যদিও ওই কেরোসিনের দোকানে থাকা ব্যক্তি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘আমি জানি না কে টাকা নিচ্ছে। হয় পুণ্যার্থীরা মিথ্যে অভিযোগ করছেন, অথবা অন্য কেউ টাকা নিয়েছে।’’

স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, জেলা প্রশাসন মেলার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। মেলায় আসা মন্ত্রী ও অতিথিদের জন্য বিপুল আয়োজন করা হচ্ছে। অন্য দিকে, বহু পুণ্যার্থী রাত কাটাচ্ছেন সৈকতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে পুণ্যার্থীদের থাকার একাধিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা-ও অনেকে সমুদ্রতটে রাত কাটাচ্ছেন। অভিযোগ পেয়েছি, এলাকার বেশ কিছু যুবক ত্রিপল টাঙিয়ে পুণ্যার্থীদের থেকে টাকা নিয়ে থাকতে দিচ্ছে। কিছু ধরপাকড় হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gangasagar Mela Winter Makar Sankranti
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE