E-Paper

খুনের পরে গা-ঢাকা গ্রামের বাড়িতে, কালো স্কুটারই ধরাল অভিযুক্তকে

খুনের ঘটনায় গত রবিবার সকালে গিরিডির বিরনি থানা এলাকা থেকে আনসারিকে গ্রেফতার করে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার একটি দল। তার আগে তদন্তকারীরা ওই থানা এলাকারই কাপিলো গ্রাম থেকে একটি কালো রঙের স্কুটার উদ্ধার করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৪৪

—প্রতীকী চিত্র।

রাজাবাজারে পরিচিত ফল বিক্রেতাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুনের পরে স্কুটার চালিয়ে ঝাড়খণ্ডের গিরিডির বিরনি থানা এলাকায় গ্রামের বাড়িতে পালিয়েছিল এই ঘটনায় ধৃত, মূল অভিযুক্ত মুসলিম আনসারি ওরফে মহম্মদ আনসারি। তদন্তকারীরা জেনেছেন, দেশের বাড়িতে পালিয়ে গিয়ে সে এক-এক জন আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটাচ্ছিল। তবে, কোনও আত্মীয়ের বাড়িতেই এক রাতের বেশি থাকছিল না আনসারি। দিনের বেলায় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে গ্রামের কাছেই জঙ্গলে লুকিয়ে থাকত অভিযুক্ত। রাতে গা-ঢাকা দিত কোনও এক আত্মীয়ের বাড়িতে।

এই খুনের ঘটনায় গত রবিবার সকালে গিরিডির বিরনি থানা এলাকা থেকে আনসারিকে গ্রেফতার করে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার একটি দল। তার আগে তদন্তকারীরা ওই থানা এলাকারই কাপিলো গ্রাম থেকে একটি কালো রঙের স্কুটার উদ্ধার করেন। তদন্তে জানা যায়, ওই স্কুটারটি চালিয়েই গ্রামে পালিয়েছিল আনসারি। পরে গ্রামের একটি ফাঁকা মাঠে খড়ের গাদায় সে স্কুটারটি লুকিয়ে রেখেছিল। সোমবার আনসারিকে ট্রানজ়িট রিমান্ডে কলকাতায় এনে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ৯ দিনের পুলিশি হেফাজত দেন।

গত ২২ ডিসেম্বর রাজাবাজার মোড়ে ফল বিক্রেতা মেহবুব আলমকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। তদন্তে নেমে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে আনসারিকে চিহ্নিত করেন তদন্তকারীরা। ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছে মেহবুবের থেকে কিছুটা দূরে স্কুটার দাঁড় করায় আনসারি। এর পরে সঙ্গে থাকা গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে পিছন থেকে এসে ওই ফল ব্যবসায়ীকে কোপাতে থাকে। মেহবুব লুটিয়ে পড়লে ভিড়ের মধ্যে দিয়ে হেঁটেই চলে যায় অভিযুক্ত। শেষে স্কুটার নিয়ে হাওড়া স্টেশনের দিকে চম্পট দেয়।

তদন্তে নেমে প্রথমে পুলিশের ধারণা হয়েছিল, হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারে আনসারি। কিন্তু সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, অভিযুক্ত হাওড়া স্টেশনে না গিয়ে স্কুটার নিয়ে জাতীয় সড়ক ধরে ঝাড়খণ্ডের দিকে গিয়েছে। এর পরেই আনসারির গ্রামের বাড়িতে হানা দেয় আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ এবং তার আত্মীয়দের উপরে নজরদারি শুরু করে। এর ফলে আনসারির আত্মীয়েরা তাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে বলে দাবি পুলিশের।

এক পুলিশকর্তা জানান, তদন্তে উঠে এসেছে, আনসারির স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন ব্যবসায়ী মেহবুব। যা নিয়ে আনসারির পরিবারে অশান্তি চলছিল। মেহবুবকে খুনের পরিকল্পনাও তখনই করে আনসারি। সেই মতো সে ঘটনার দিন চারেক আগে স্ত্রী এবং তিন ছেলেকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। যাতে খুনের পরে সে নিজে বাড়ি চলে গেলেও পুলিশের সন্দেহে না পড়ে। কিন্তু শেষমেশ স্কুটারের সূত্র ধরে তদন্তকারীদের জালে ধরা পড়ে অভিযুক্ত।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

police investigation Jharkhand Kolkata Police

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy