Advertisement
E-Paper

মিড ডে মিল বন্ধ, স্কুলে কমছে উপস্থিতি

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, রান্নার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে ব্যাঙ্কের কাজিয়ায় বন্ধ রয়েছে টাকা আসা। যার ফল ভুগতে হচ্ছে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের।

নির্মাল্য প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০৮:০০
শুকনো-মুখে: স্কুলে পড়ুয়ারা। মিলছে না খাবার। নিজস্ব চিত্র

শুকনো-মুখে: স্কুলে পড়ুয়ারা। মিলছে না খাবার। নিজস্ব চিত্র

ছেলেমেয়েদের স্কুলমুখো করতে সরকারের বড় ভরসা মিড ডে মিল। কিন্তু সেই মিলই মাসখানেক ধরে বন্ধ বাগদার গোয়ালবাগি শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে।

পাঁচটি শ্রেণি মিলিয়ে ৬৪ জন পড়ুয়া। কিন্তু গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে স্কুলে বন্ধ মিড ডে মিল। তালাবন্ধ রান্নাঘর। আসছেন না রাঁধুনিও।

কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি?

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, রান্নার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে ব্যাঙ্কের কাজিয়ায় বন্ধ রয়েছে টাকা আসা। যার ফল ভুগতে হচ্ছে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের।

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ‘আকাশ’-এর দলনেত্রী প্রমিলা রায় বলেন, “আগে যিনি এই গোষ্ঠীর দায়িত্বে ছিলেন, তিনি ব্যাঙ্ক থেকে কিছু টাকা ধার করেন। সেই টাকা এখনও শোধ হয়নি। ফলে ব্যাঙ্ক আর টাকা দিতে চাইছে না।’’ প্রমিলা জানান, চাঁদা তুলে কিছু দিন রান্না চালানোর চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেটাও আর সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাঙ্কে কথা বলতে গেলে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ।

গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের মালিপোতা শাখা সূত্রে অবশ্য খবর, ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠকে সমাধান সূত্র বের করার চেষ্টা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, কিস্তিতে টাকা শোধ করতে। সেই মর্মে চুক্তিপত্র তৈরি করে গোষ্ঠীর মহিলাদের সই করতে বলা হয়। কিন্তু ‘আকাশ’-এর মহিলারা নাকি চুক্তিপত্রে সই করতে চাননি।

এই পরিস্থিতিতে ২ জুলাই থেকে স্কুলে বন্ধ মিড ডে মিল। স্কুলে এসে খেতে না পেয়ে সমস্যায় পড়েছে পড়ুয়ারা। অভিভাবকদের মধ্যেও ক্ষোভ জমছে। শিপ্রা খান নামে এক অভিভাবক বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। সারা দিন বাড়ির বাইরে থাকি। মাঠেঘাটে কাজ করি। স্কুলে খাবার দিলে নিশ্চিন্তে থাকি। কিন্তু এখন বাচ্চা সারা দিন না খেয়ে থাকছে।” স্বপ্না বিশ্বাস নামে আর এক অভিভাবকের বক্তব্য, “অন্য স্কুলের ছেলেমেয়েরা নিয়মিত মিড ডে মিল পায়। কিন্তু আমাদের বাড়ির বাচ্চারা শুকনো মুখে বাড়ি ফেরে। এ ভাবে চলতে থাকলে অন্য স্কুলে ভর্তি করার কথা ভাবতে হবে।” সৌরভ রায়, বাদশা মণ্ডল নামে খুদে দুই পড়ুয়া বলে, ‘‘এতক্ষণ না খেয়ে থাকতে খুব কষ্ট হয়।’’ অভিভাবকদের অভিযোগ, এর আগেও মাঝে মধ্যে অনিয়মিত ভাবে খাবার দেওয়া হত। এ বছরই জানুয়ারি ও মার্চ মাসে কিছু দিন খাবার বন্ধ ছিল।

শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহায়িকা সাবিত্রী বিশ্বাসের কথায়, “ব্যাঙ্ক আর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জটিলতার মাঝে পড়ে বাচ্চাগুলো খাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মিড ডে মিল বন্ধ থাকায় স্কুলে উপস্থিতির হার কমে গিয়েছে। এ ভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলছুটও হয়ে যেতে পারে।’’ ইতিমধ্যে জুলাই মাসে দু’বার বিডিওকে এ নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাগদার বিডিও ইরফান হাসমির অবশ্য দাবি, বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। খোঁজ নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

Mid Day Meal School
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy