Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

থানায় অপহরণের নালিশ, বাড়িতে বিয়ের তোড়জোড়

অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। কিন্তু হঠাৎই সামনে আসে এমন এক তথ্য, দুঁদে পুলিশ অফিসারদেরও চোখ কপালে। জানা যায়, মেয়ে ফিরে তো এসেইছে। বরং ওই যুবকের সঙ্গেই চার হাত করার কাজ প্রায় শেষের পথে।

সীমান্ত মৈত্র
হাবরা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৯
Share: Save:

মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, পরিচিত এক যুবক তাকে নিয়ে পালিয়েছে— হাবরা থানায় দিন কয়েক আগে এমনই অভিযোগ জানান এক ব্যক্তি। জানান, মেয়ের বয়স সতেরো বছর তিন মাস। উচ্চ মাধ্যমিক দেবে। যে ছেলে মেয়েকে নিয়ে গিয়েছে, সে সবে একুশ। থাকে অশোকনগরে।

অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। কিন্তু হঠাৎই সামনে আসে এমন এক তথ্য, দুঁদে পুলিশ অফিসারদেরও চোখ কপালে। জানা যায়, মেয়ে ফিরে তো এসেইছে। বরং ওই যুবকের সঙ্গেই চার হাত করার কাজ প্রায় শেষের পথে।

খবর পাকা জেনে সোমবার রাতে পুলিশ হাজির হয় মেয়েটির বাড়িতে। ততক্ষণে বর এসে গিয়েছে। বরযাত্রীরাও সেজেগুজে হাজির। নিমন্ত্রিতদের ভিড়ে গমগম করছে বাড়ি। প্যান্ডেল মাইক বাজছে। ভেসে আসছে মাংসের গন্ধ। কেউ কেউ তো পাত পেড়ে খাওয়াও শুরু করেছেন।

নেমন্তন্ন বাড়িতে পুলিশ দেখে ভিরমি খান সকলে। দেখা যায়, বেনারসি, গয়না পড়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছে কনে। পুলিশ তাদের আটকায়। পরিবারের লোকজনকে বিয়ে বন্ধ করতে বলে। মেয়ের বাবা পুলিশের কাছে অনুরোধ করে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ধারদেনা করে আয়োজন করেছি। এখন বিয়ে বন্ধ হলে খুব মুশকিল।’’

পুলিশ অফিসারেরা জানান, তাঁদের হাত-পা বাঁধা। আঠারো বছর বয়স না হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া আইননত দণ্ডণীয় অপরাধ। মেয়ের বাবার দাবি, বিষয়টি তাঁরা জানতেন না।

পুলিশ মেয়েটিকে বিয়ের সাজেই থানায় আনে। মঙ্গলবার তাকে বারাসত জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাত্রপাত্রীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়ের বাড়ির লোকজন প্রথমে তা মানতে চায়নি। মেয়েটি ২ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে পালায়। পরে দুই পরিবার আলোচনা করে স্থির করে, বিয়ে দেওয়া হবে। সেই মতো সোমবার বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল।

কিন্তু পুলিশের কাছে অপহরণের নালিশ দায়ের করা হল কেন? স্পষ্ট উত্তর নেই মেয়ের বাবার কাছে। আইন-কানুন ভাল জানেন না, বার বারই বলছিলেন সে কথা।

পুলিশের দাবি, মেয়েটি জানিয়েছে, বিয়ের পর সে শ্বশুর বাড়িতে থেকেই লেখাপড়া করবে। আর কয়েক মাস পরে প্রাপ্তবয়স্ক হলে সে বিয়ে করতে চায়। ওই তরুণ ইঞ্জিনায়ারিং পড়েন। তাঁরও কয়েক মাস পরে বিয়ে করতে আপত্তি নেই বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Minor Marriage Child Marriage Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE