কদাকার: পুরসভার সিঁড়িতে পড়ে আবর্জনা।
স্থায়ী চাকরি ও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে পুরসভার সিঁড়িতে আর্বজনা ফেলে বিক্ষোভ দেখালেন পুরকর্মীরা।
এর ফলে সোমবার সারা দিন বন্ধ থাকে কাঁচরাপাড়া পুরসভার কাজকর্ম। পুরসভার সিঁড়িতে মানুষের মল, পচে যাওয়া কুকুরের দেহ, আবর্জনার স্তূপ দেখে ফিরে যান পুরপ্রধান-সহ অন্য কাউন্সিলর, পুর আধিকারিকেরা।
এই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের কথাই বলছেন বিরোধীরা। স্থানীয় সিপিএম নেতা শম্ভু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিধায়ক ও পুরপ্রধানের গোষ্ঠীর লড়াইতে ভুগছেন কাঁচরাপাড়ার মানুষ।’’
কাঁচরাপাড়ার পুরপ্রধান তৃণমূলের সুদামা রায় অবশ্য বলেন, ‘‘কী যে হচ্ছে, আমি নিজেও বুঝতে পারছি না। তবে কোথাও কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। সাফাই কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছি। কেন এই অস্বাভাবিক আচরণ করছেন ওঁরা, সেটা দেখছি।’’ বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের এ বিষয়ে বক্তব্য, ‘‘আমি বাইরে আছি। এ বিষয়ে কিছু জানা নেই।’’
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার থেকে। ওই দিন থেকেই সাফাইকর্মীরা কাঁচরাপাড়ার আবর্জনা সাফাই করা বন্ধ করে দেন। পুরকর্তারা কিছুই না জানার ভান করে আছেন। পুরো বিষয়টিতে স্থানীয় বিধায়কও চুপ। সাফাই কর্মীদের ক্ষোভ, স্থায়ী চাকরির আশ্বাস থাকলেও চার বছর পেরিয়ে গেলেও তা স্থায়ী হয়নি। বেতনও বাড়েনি। বিধায়কের কাছে পুরপ্রধানের নামে দুর্ব্যবহারের নালিশও করেছেন তাঁরা। রমেশ বাঁশফোর নামে এখ সাফাইকর্মী বলেন, ‘‘প্রতিশ্রুতি ছিল চাকরি পাকা হওয়ার এবং বেতন বাড়ার। কিন্তু তা হয়নি। অন্য পুরসভাগুলির তুলনায় আমাদের কম টাকা দেওয়া হয়। এই সব কারণেই এই আন্দোলন।’’
পুরসভায় ৪৭৯ জন অস্থায়ী সাফাই কর্মীর আচমকা হরতালের জেরে এলাকার স্বাভাবিক জনজীবন মুখ থুবড়ে পড়েছে। শনি ও রবিবার কোনও রকমে পার করলেও সোমবার সকাল থেকে শহরে জঞ্জালের চিত্র ভয়ঙ্কর আকার নেয়। অনেক বাসিন্দাই দু’দিন বাড়ির প্রতিদিনের বর্জ্য কোনও রকমে জমিয়ে রেখেছিলেন। এ দিন সকালেও সাফাই কর্মীরা বাড়ি থেকে আবর্জনা না নেওয়ায় অনেকে এলাকার ভ্যাটগুলিতে নিজেরাই সে সব ফেলে আসেন। রাস্তার যত্রতত্র পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে আবর্জনা। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মাংসের হাড়, মাছের কাঁটা, আঁশ। কোথাও আবার কুকুর, বেড়াল মরা অবস্থায় পড়ে আছে। সব থেকে খারাপ অবস্থা গাঁধী মোড়-সংলগ্ন অঞ্চলে। বেলা বাড়তেই কাঁচরাপাড়া পুরসভার সাফাই কর্মীরা আবর্জনা, মল, মরা কুকুরের দেহ নিয়ে পুরভবনের সামনে হাজির হন। পুরসভার সামনে বিক্ষোভের পাশাপাশি পুরভবনে ঢোকার মুখে ও চেয়ারম্যানের ঘরের দিকে যাওয়ার সিঁড়িতে ছড়িয়ে দেওয়া হয় আবর্জনা।
সকাল থেকেই আভাস পেয়ে কাজে আসেননি পুরসভার অনেক কর্মী। জঞ্জাল জটে পুরসভার কাজ বন্ধ থাকল যেমন, তেমনই পুরসভার সামনে ও আশেপাশের দোকান-বাজারও এ দিন খোলেনি দুর্গন্ধ আর ছড়িয়ে থাকা নোংরার জন্য।
ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy