বরাহনগরে নিজের দোকানে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনের পর কেটে গিয়েছে প্রায় ২৪ ঘণ্টা। এখনও অভিযুক্তদের এক জনও ধরা পড়েননি। অন্য দিকে, ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে বাসিন্দারা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিরা ধরা না পড়লে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দিলেন বঙ্গীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ী।
বরানগরের শম্ভুনাথ দাস লেন এলাকাটি জুড়ে ছোটবড় বহু দোকান। সবচেয়ে বেশি আছে সোনার গয়নার কারখানা এবং অলঙ্কারের দোকান। শনিবার দুপুরের শঙ্কর জানার খুন তাঁদের সকলকে নাড়িয়ে দিয়েছে। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়েরা আবার আঙুল তুলেছেন পুলিশের দিকে।
শম্ভুনাথ দাস লেনে শঙ্করের গয়নার দোকান থেকে বরাহনগর থানার দূরত্ব মেরেকেটে ১ কিলোমিটার। তার পরেও ব্যস্ত এলাকায় দোকানে ঢুকে দোকানমালিককে খুন করে লুটপাট চালিয়ে কী ভাবে পাঁচ জন বেরিয়ে গেল, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সকলে। ক্ষোভে ফুঁসছেন বরাহনগর থেকে সিঁথির সোনার দোকানের ব্যবসায়ীরা। রবিবার ব্যবসায়ীদের একাংশ শঙ্করের দোকানের সামনে জড়ো হন। তাঁদের ঘোষণা, ‘‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিরা গ্রেফতার না-হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব সকলে।’’
শঙ্কর ব্যবসার সূত্রেই বরাহনগর এলাকায় থাকতেন। শম্ভুনাথ দাস লেন এলাকাতেই ২০১০ সালে একটি বাড়ি কিনছিলেন। তাঁর মেয়ে থাকে কানাডায়। ছেলে শান্তনু জানা দিন কয়েক আগে দিল্লি বেড়াতে যান। তবে বাবার সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ থাকত। শনিবার দুপুরে দিল্লিতে বসে প্রথম খটকা লাগে তাঁরই।
আরও পড়ুন:
শান্তনুর মোবাইলের সঙ্গে দোকানের সিসি ক্যামেরা ‘ওয়েবকাস্টিং’ করা ছিল। দুপুরে মোবাইল খুলে তিনি খেয়াল করেন সিসি ক্যামেরা বন্ধ! সঙ্গে সঙ্গে বাবার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু পাননি। প্রতিবেশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদের কয়েক জন দোকানে গিয়ে দেখেন মর্মান্তিক দৃশ্য।
পুলিশ জানিয়েছে, মোট পাঁচ দুষ্কৃতী শঙ্করের দোকানে ঢুকেছিল। তখন দোকানমালিক একাই ছিলেন। সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে খুন করা হয় শঙ্করকে। লুটপাট চালিয়ে কয়েক মিনিটে ওই এলাকা ছাড়ে তারা। স্থানীয়দের দাবি, দুষ্কৃতীদের মধ্যে তিন জন শম্ভুনাথ দাস লেনের পিছন দিকের রাস্তা দিয়ে দমদম স্টেশনের দিকে পালায়। বাকি দু’জন সিঁথির মোড়ের দিকে চলে গিয়েছিল। সিসিটিভির সূত্র ধরে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক তদন্তকারী। তিনি জানান, সব রকম ভাবে চেষ্টা চলছে। অপরাধীরা শীঘ্রই ধরা পড়বে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীর সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল কি না তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।