E-Paper

ডেঙ্গি প্রতিরোধে জোর আনার দাবি

ডেঙ্গি মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী জেলার পুরসভা এবং ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে জেলা পর্যায়ে মনিটারিং কমিটির বৈঠক করেছেন।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৪ ০৮:১৩
বনগাঁর গ্রামাঞ্চলে এইসব জমা জলেই তৈরি হচ্ছে মশার আঁতুরঘর - ছড়াচ্ছে ডেঙ্গির মত রোগ।

বনগাঁর গ্রামাঞ্চলে এইসব জমা জলেই তৈরি হচ্ছে মশার আঁতুরঘর - ছড়াচ্ছে ডেঙ্গির মত রোগ।

এ বারও ডেঙ্গির হাত থেকে নিস্তার মিলছে না উত্তর ২৪ পরগনার। বর্ষা পুরোদমে শুরুর আগেই জেলায় চলতি বছরে (১১ জুলাই পর্যন্ত) ২৯৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। এই সংখ্যা গতবারের চেয়ে কম। তা সত্ত্বেও মশাবাহিত ওই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে তৎপরতা শুরু হয়েছে প্রশাসনের তরফে। তবে, বেশ কিছু পুর এলাকা এবং গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে জমা জল সরানো বা ঝোপজঙ্গল পরিষ্কারের কাজে এখনও ততটা গতি আসেনি। দ্রুত কাজে জোর আনার দাবি উঠছে।

ডেঙ্গি মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী জেলার পুরসভা এবং ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে জেলা পর্যায়ে মনিটারিং কমিটির বৈঠক করেছেন। জেলাশাসক বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল অফিসার, স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্সদের ডেঙ্গি নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জেলার হাসপাতাল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাফাইয়ের কাজে গতি আনতে।’’

জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘জেলার ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলি চিহ্নিত করা হচ্ছে। সেই মতো সেই সব এলাকায় শিবির করে মানুষকে সচেতন করা হবে। জেলার পঞ্চায়েতগুলিকে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে গতি আনতে নির্দেশ দেওয়া হবে।’’

বিভিন্ন এলাকার চিকিৎসকেরা জানান, জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। একই পরিবারে জ্বর ও ডেঙ্গি হয়েছে, এমন উদাহরণও রয়েছে। অনেকে আবার হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না গিয়ে স্থানীয় চিকিৎসককে দেখিয়ে বাড়িতেই থাকছেন। সচেতনতার অভাবে বহু মানুষ ডেঙ্গি পরীক্ষা করাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, ডেঙ্গি রুখতে পতঙ্গ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সমীক্ষা করা হচ্ছে নিয়মিত। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ব্লকগুলিকে বিশেষ কীটনাশক (বায়ো-লার্ভিসাইড) এবং গাপ্পি মাছ দেওয়া হয়েছে। জমা জল সরানো, মশার লার্ভা শনাক্ত করা ও নষ্ট করার কাজ চলছে। নিকাশি নালা, খাল, বিল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

২০১৭ সালে এই জেলায় ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নেয়। পাঁচ মহকুমাতেই (বনগাঁ, বসিরহাট, বারাসত, ব্যারাকপুর ও বিধাননগর) তা ছড়িয়েছিল। বিশেষ করে দেগঙ্গা, হাবড়া ও অশোকনগরে ডেঙ্গির প্রকোপ ছিল বেশি। মশার হাত থেকে বাঁচতে দিনের বেলাতেও মানুষ বাড়িতে মশারি খাটিয়ে রাখতেন। এমনকি, বাড়ির গবাদি পশুদেরও মশারির মধ্যে রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন বাসিন্দারা। এরপরে ২০১৮ এবং ২০১৯-এও ডেঙ্গির তাণ্ডব দেখা গিয়েছিল জেলায়।

ডেঙ্গি রুখতে আগেই জেলার পুরসভা এবং ব্লক এলাকায় একবার ব্যবহারযোগ্য পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অভিযোগ, নজরদারির অভাবে আবারও জেলা জুড়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার রমরমিয়ে হচ্ছে। ফলে, নালায় সেই সব প্লাস্টিক
আটকে জল নিকাশি বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। কিছু এলাকায় নিয়মিত মশা মারা তেল স্প্রে করা হচ্ছে না, এমন অভিযোগও শোনা যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, বাড়ির মধ্যে জমা জল, অসংখ্য ডোবায় ঝোপজঙ্গল ও কচুবন গজিয়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা, কচুগাছের ডগায় জমে থাকা জলে ডেঙ্গির মশার লার্ভা জন্মাতে পারে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dengue Bangaon

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy