Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেড়শো পার হাবড়া শহরে

হাবড়ার পুরপ্রশাসক নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘বুধবার পর্যন্ত হাবড়া শহরে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৬২ জন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবড়া শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২০ ০৪:৩২
Share: Save:

হাবড়া শহরে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দেড়শো ছাড়িয়ে গেল। নিয়মিত ভাবে এখানে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এরপরেও কিছু মানুষের সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

হাবড়ার পুরপ্রশাসক নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘বুধবার পর্যন্ত হাবড়া শহরে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৬২ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮৫ জন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭২ জন। ১০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা হোম আইসোলেশনে আছেন। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।’’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে হাবড়া শহরে ২৯ জুলাই থেকে ৫ অগস্ট পর্যন্ত লকডাউন করা হয়। এই সময়ে বাজার, হাট, দোকানপাট সব বন্ধ ছিল। একমাত্র ওষুধ এবং দুধের দোকান খোলা ছিল। জরুরি পরিষেবা ছাড়া মানুষ বাড়ির বাইরে বের হননি। নীলিমেশ জানিয়েছেন, লকডাউনের মধ্যে হাবড়া শহরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ জন। হাবড়া শহরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়লেও কিছু মানুষের মধ্যে এখনও সচেতনতার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ। হাবড়া শহরের বাসিন্দা চিকিৎসক দীপক কুণ্ডু বলেন, ‘‘কিছু মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব আছে। জ্বর, সর্দি-কাশি হলেও মানুষ লালারস পরীক্ষা করাচ্ছেন না। ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন।’’ করোনা পজ়িটিভ হলে কোথায় ভর্তি হবেন, সামজিক চাপ আসবে কিনা, এ সব ভেবেই অনেকে পরীক্ষা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছেন বলে তাঁর মত। ‘‘এর ফলে সংক্রমণ আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়ছে’’— বলেন তিনি।লকডাউনের মধ্যেও অনেককেই মাস্ক না পরে অকারণ বাড়ির বাইরে করতে দেখা গিয়েছে। স্বাভাবিক দিনে অনেকেই মাস্ক না পরে বাইরে বের হচ্ছেন। বাজার-হাটে শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় থাকছে না। এমনও দেখা গিয়েছে, বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার মাস্ক গলায় ঝুলছে। বাড়িতে ফিরে হাত-পা জীবাণুমুক্ত করছেন না অনেকে। শহরের এক চিকিৎসকের অভিজ্ঞতায়, ‘‘চেম্বারে ডাক্তার দেখাতে এসেও অনেকেরই মাস্ক গলায়, কানে ঝুলে থাকে। বুধবারই আমার চেম্বার ৪ জনকে বলে মাস্ক নাকের উপরে তুলতে বলতে হয়েছে।’’

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষ থেকে আরও বেশি করে লালারস পরীক্ষার দাবি তোলা হয়েছে। সিপিএমের হাবড়া শহর এরিয়া কমিটির সম্পাদক আশুতোষ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘হাবড়া শহরে আরও বেশি করে লালারস পরীক্ষার মাত্রা বাড়াতে হবে। করোনা আক্রান্ত মানুষদের জন্য ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার ব্যবস্থা করতে হবে। হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে।’’ হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘এখন রোজ গড়ে ২০-২৫ জনের লালারস সংগ্রহ করে কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে। র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে হাসপাতাল থেকে দৈনিক ২০-২৫ জনের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’ শহরের সচেতন বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘লালারস দিতে মানুষ হাসপাতালে আসছেন কোনও যানবাহন করে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তী সময়ে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। যানবাহনে করে আসার সময়ে তাঁরা অনেক মানুষের সংস্পর্শে চলে আসছেন। তা ছাড়া, লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট আসতেও কয়েক দিন সময় লেগে যাচ্ছে।’’ পুরপ্রশাসক বলেন, ‘‘শহরের মানুষকে সচেতন করতে লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Habra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE