Advertisement
০২ মে ২০২৪
Dattapukur Blast

উদ্ধার করা হল আর একটি দেহ, ইতস্তত পড়ে দেহাংশ, সোমবার সকালে দুর্গন্ধ আর আতঙ্ক সঙ্গী মোচপোলের

সোমবার সকালে বিস্ফোরণস্থলের ঠিক পিছন দিক থেকে একটি মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২০০ মিটার দূর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি মাথা। উদ্ধার হয়েছে আরও কিছু দেহাংশও।

One body and some body parts found in Dattapukur blast area on Monday morning

বিস্ফোরণস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সোমবার সকালে দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
দত্তপুকুর শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৩ ১০:৩২
Share: Save:

ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ২৪ ঘণ্টা। সোমবার সকালেও ইতিউতি দেহাংশ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রামে। এরই মধ্যে কেরামত আলির বাজি কারখানা অর্থাৎ, বিস্ফোরণস্থলের ঠিক পিছন দিক থেকে একটি মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২০০ মিটার দূর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি মাথা। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, বিস্ফোরণের অভিঘাতেই সোমবার উদ্ধার হওয়া দেহটি থেকে মাথা ছিটকে গিয়ে পড়েছে ২০০ মিটার দূরে। এ ছাড়াও একটি বাড়ির সামনে থেকে হাতের পাঞ্জা উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রবিবার দুপুরের পরেও মোচপোলবাসীর আকস্মিকতার ঘোর কাটেনি। এলাকায় গিয়েছেন পুলিশের কর্মী, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি, রাজনীতিক এবং জনপ্রতিনিধিরা। সোমবার সকালে বিস্ময় এবং কৌতূহল খানিক কমলেও দেহাংশ দেখতে ইতিউতি ভিড় জমিয়েছে জনতা। সোমবার সকালে মোচপোল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, হলুদ ফিতে দিয়ে ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। দুর্গন্ধে শাড়ির আঁচল কিংবা হাত দিয়ে নাকচাপা দিয়েই দেহাংশ দেখতে এসেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনার বীভৎসতায় এখনও আতঙ্ক কাটছে না তাঁদের। এই গ্রামের উপর দিয়ে আগামী কয়েক দিন যে ঝড় বয়ে যেতে চলেছে, তা-ও মানছেন গ্রামবাসীদের একাংশ।

তা ছাড়া মজুত থাকা বাজি এবং বিস্ফোরক পদার্থ থেকে নতুন কোনও বিপদ দেখা দেবে কি না, সেই আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে মোচপোলবাসীর মধ্যে। ভেঙেচুরে যাওয়া বাড়িঘরের মেরামতি কী ভাবে হবে, তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেকে। রবিবার গভীর রাতে নীলগঞ্জ এলাকা থেকে কেরামত আলির ‘সহযোগী’ শফিক আলি ওরফে সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে, এ-ও জানা গিয়েছে যে, কেরামতের ‘বাজি’র ব্যবসায় ‘অংশীদারিত্ব’ ছিল শফিকের। সূত্রের খবর, বাজি কারখানার বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন কেরামতও।

রবিবার সকালে বিস্ফোরণের অভিঘাতে কেঁপে উঠেছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দত্তপুকুর এলাকার মোচপোল গ্রাম। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত কমপক্ষে দশ জন। দুর্ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে স্থানীয়রা রবিবার থেকেই বলতে শুরু করেন যে, ‘‘এ সবই কেরামতের কাণ্ড।’’ যে কাণ্ডে রবিবার সকালে কেঁপে ওঠে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরের বারাসত শহরও। যে বিস্ফোরণের তীব্রতায় কারও দেহাংশ উড়ে গিয়ে পড়েছে পাশের বাড়ির ছাদে। বিস্ফোরণের অভিঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়েছে সাতটি শরীর।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয়দের বাধা, বারণ ধর্তব্যে আনতেন না কেরামত। নিজের মতো করে কারখানা খুলে ‘বাজি’ বানাতে শুরু করেছিলেন। রবিবার সকালে তাঁর অবৈধ ‘বাজি’ কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। স্থানীয় সামসুল হকের জমি ভাড়া নিয়েই নাকি এই বাজির ব্যবসা ফেঁদেছিলেন কেরামত। সামসুলের বাড়ি লাগোয়া জমিতে দিনের বেলায় চলত ‘বাজি’ তৈরি। আর দু’টি ঘরে চলত ‘বাজি’ প্যাকেজিংয়ের কাজ। সামসুল এই কারখানাতেই কাজ করতেন। বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছে তাঁরও। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত্যু হয়েছে কেরামতেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dattapukur Blast Firecracker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE