সাইকেলে চেপে কাজে যাচ্ছিলেন বছর সত্তরের বৃদ্ধ। আচমকাই তাঁর উপরে ছিঁড়ে পড়েছিল হাইটেনশন তার। তাতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধের। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে রহড়ায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।
পুলিশ জানিয়েছে, খড়দহের কে এস পথ এলাকার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধের নাম মহম্মদ আমিন (৭০)। এ দিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে ঈশ্বরীপুর জুট মিলে কাজে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে খড়দহ পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের রহড়া হাড়িপুকুর সাইবোনা রোডে দুর্ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা সুকুমার দাস বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধ সাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন। আচমকা তার ছিঁড়ে ওঁর উপরে পড়ে। একটা আলোর ঝলকানি হল। দেখলাম, রাস্তায় সাইকেল ও বৃদ্ধ পড়ে রয়েছেন।’’
স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, এ দিন ভোরে আচমকাই লোডশেডিং হয়ে যায়। অনেকেই বাড়ির বাইরে চলে আসেন। এমন ঘটনা দেখে সকলেই হকচকিয়ে যান। খবর পেয়ে রহড়া থানার পুলিশ ও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। জানা যাচ্ছে, প্রায় ১১ হাজার ভোল্টের তার ছিঁড়ে পড়েছিল ওই বৃদ্ধের উপরে। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধের। এ দিন প্রথমে বৃদ্ধের পরিচয় পাওয়া যায়নি। পরে খোঁজখবর করে তাঁর এক জামাইয়ের নম্বর জোগাড় করে পুলিশ তাঁকে খবর দেয়। জামাই মহম্মদ সওকত আলি বলেন, ‘‘পুলিশের ফোন পেয়ে আমি গিয়ে দেহ শনাক্ত করি। কেন এ ভাবে তার ছিঁড়ে পড়ল, প্রশাসন তদন্ত করে বার করুক।’’
বৃদ্ধের তিন মেয়ের মধ্যে দু’জন বিবাহিতা। অবিবাহিতা মেয়েকে নিয়ে থাকতেন বৃদ্ধ। বাড়িতে তিনিই ছিলেন একমাত্র রোজগেরে। তাই পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন পরিজন ও প্রতিবেশীরা। হাইটেনশন লাইন রক্ষণাবেক্ষণে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়েরা। তাঁদের দাবি, পুরনো তারের মেরামতি ও পাল্টানোর কথা থাকলেও তা হয়নি।
এই ঘটনায় কারও গাফিলতি আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আঞ্চলিক (উত্তর ২৪ পরগনা) ম্যানেজার সিদ্ধেশ্বর দাস। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয়দের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট এলে উচ্চপদস্থ কর্তাদের কাছে পাঠানো হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)