Advertisement
E-Paper

মায়ের কোলে চেপেই পরীক্ষাকেন্দ্রে যূথিকা

উপস্থিতিতেই সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে একরত্তি যূথিকা। বাবা সুভাষ ধারা সামান্য গ্রিলের দোকান চালান। পরিবারে অভাব নিত্যসঙ্গী। আর তার উপর যূথিকা এবং তার ভাই জয়ন্ত ছোট বেলা থেকেই অস্টিওপোরেসিসে আক্রান্ত।

পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে। নিজস্ব চিত্র।

পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে। নিজস্ব চিত্র।

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪২
Share
Save

উপস্থিতিতেই সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে একরত্তি যূথিকা।

বাবা সুভাষ ধারা সামান্য গ্রিলের দোকান চালান। পরিবারে অভাব নিত্যসঙ্গী। আর তার উপর যূথিকা এবং তার ভাই জয়ন্ত ছোট বেলা থেকেই অস্টিওপোরেসিসে আক্রান্ত। এককথায় বলা যায় শরীরের হাড় নরম। সে কারণে স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠতে পারেনি যূথিকা। অনেক চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করেছিল পরিবার। কিন্তু সুরাহা কিছু হয়নি। সেই সব বাধা কাটিয়ে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে যূথিকা।

পাথরপ্রতিমার দিগম্বরপুরের ওই মেয়েটির ওজন মাত্র ১৩ কেজি। গদামথুরা বিদ্যানিকেতনের ১৯ বছরের সেই ছাত্রীই সমস্ত বাধাকে কাটিয়ে এ বার মাধ্যমিক দিচ্ছে। সিট পড়েছে দিগম্বরপুরের মহেন্দ্র ইন্দ্র হাইস্কুলে। ভবিষ্যতে চাকরি করে বাবা মায়ের কষ্ট দূর করার অদম্য ইচ্ছেও রাখে মেয়েটি। সে জানিয়েছে, তার পরীক্ষা ভালই হচ্ছে। স্কুলের তরফে একটি আলাদা ঘরে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার সুবিধা মতো মাটিতে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে সে। নিজে হাঁটতে পারে না। স্কুলে আসত মায়ের কোলে চড়ে। মা ছবিরানী দেবীর কোলে চেপেই সে পরীক্ষাকেন্দ্রেও আসছে। এমনিতে বাঁ হাতি হলেও ডান পায়ের অবলম্বনে ডান হাতেই পরীক্ষার উত্তর লিখছে যূথিকা। মেয়ের আত্মবিশ্বাস দেখে অবাক স্কুলের বাকি পরীক্ষার্থী এবং শিক্ষকরাও। মেয়েটির মা ছবিরানী ধারা বলেন, ‘‘পরিবারে আমার ছেলেরও বাঁ হাত ছাড়া আর কিছুই চলে না। নবম শ্রেণিতে উঠেছে। তাকেও স্কুলে দেওয়া নেওয়া করতে হয়। কী কষ্টে যে সংসারটাকে টানছি, তা বলার নয়।’’

সামান্য আয়ের পরিবারে খাটতে হয় সকলকেই। কিন্তু ছেলেমেয়ের চিকিৎসার জন্য চলে গিয়েছে অনেক টাকা। সুভাষবাবু জানান, গ্রামাঞ্চলে তো আর নিয়মিত ভাবে কেউ গ্রিলের অর্ডার দেয় না। ছেলেমেয়ে দুটির জন্য যদি একটা স্থায়ী আয়ের জায়গা থাকত তবে কিছুটা সুবিধা হত।

পরিবারের এই অভাব স্বাভাবিক ভাবেই মনে গভীর ছাপ ফেলেছে মেয়েটিরও। অনেক সময় খেয়ে না খেয়ে থেকেও একমাত্র মনের জোরে যূথিকা পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। সে কারণে যে করেই হোক ভাল পরীক্ষা তাকে দিতেই হবে।

Madhyamik Osteoporosis Student

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}