Advertisement
E-Paper

‘এই আমাদের পুজো’! ষষ্ঠী নয়, পঞ্চমী থেকেই ধর্নায় আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মা, বসবেন দশমী পর্যন্ত

কলকাতার ধর্মতলায় যখন বিচারের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারেরা আমরণ অনশনে বসেছেন, তখন বাড়ির সামনে মঞ্চ করে ধর্নায় বসলেন প্রৌঢ় দম্পতি। তাঁরা জানালেন, চাইলে যে কেউ ওই ধর্নামঞ্চে আসতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:৫১
Dharna

পঞ্চমীর সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে ধর্নামঞ্চে প্রদীপ জ্বেলে মেয়েকে স্মরণ বাবা-মায়ের (বাঁ দিক থেকে দু’জন)। —নিজস্ব চিত্র।

পরিবারের তরফে শোনা গিয়েছিল ষষ্ঠী থেকে চার দিন ধর্নায় বসবেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ধর্ষিতা এবং নিহত চিকিৎসকের বাবা-মা। তবে মঙ্গলবার পঞ্চমীর সন্ধ্যাতেই বাড়ির সামনে মঞ্চে বসল পরিবার। নির্যাতিতার বাবা-মা বললেন, ‘‘বাড়িতে থাকতে পারছি না। এখানেই আমারা শোকের পুজো কাটাব।’’

গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ভয়ঙ্কর ঘটনা এক লহমায় বদলে দিয়েছে ওই চিকিৎসকের বাবা-মায়ের জীবন। মেয়ের ধর্ষণ এবং খুনের বিচার চেয়ে রাজপথে হেঁটেছেন বাবা-মা। কলকাতার ধর্মতলায় যখন বিচারের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারেরা আমরণ অনশনে বসেছেন, তখন নিজেদের বাড়ির সামনে মঞ্চ করে ধর্নায় বসলেন প্রৌঢ় দম্পতি। তাঁরা জানালেন, চাইলে যে কেউ ওই ধর্নামঞ্চে আসতে পারেন। তবে মঞ্চে থাকবেন শুধু আত্মীয়েরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই ধর্নামঞ্চ ঘুরে গিয়েছেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ এবং কৌস্তভ বাগচী।

সাদা-কালো কাপড় দিয়ে তৈরি মঞ্চের গায়ে ঝুলছে একটি ব্যানার। তাতে লেখা, ‘স্মৃতিভারে মোরা পড়ে আছি, ভারমুক্ত, সে এখানে নেই— শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ।’ সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালিয়ে মেয়েকে স্মরণ করতে গিয়ে চোখে জল বাবা-মায়ের। তাঁরা জানালেন, মেয়ের উদ্যোগেই বাড়িতে দুর্গাপুজো হত। আর হয়তো কখনও পুজো করবেন না বাড়িতে। কিন্তু উৎসবের এই ক’টা দিন বাড়িতে থাকতেই দমবন্ধ লাগছে তাঁদের। মেয়ের কথা, পুজোর দিনে মেয়ের ব্যস্ততার স্মৃতি ঘুরেফিরে আসছে মনে। তাই বাড়ির সামনে মঞ্চ বেঁধে মেয়ের বিচারের জন্য ধর্নায় বসলেন তাঁরা। দশমী পর্যন্ত ওই ধর্না চলবে।

আরজি কর-কাণ্ডের ৫৮ দিনের মাথায় প্রথম চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। সেখানে মূল অভিযুক্ত হিসাবে নাম রয়েছে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের। মৃতা চিকিৎসকের বাবা-মা জানাচ্ছেন, সিবিআইয়ের তদন্তে তাঁরা আস্থাশীল। নির্যাতিতার বাবা ধর্না প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এটা কোনও কর্মসূচি নয়। আসলে মনের ব্যথা নিয়ে এখানে এসে বসেছি। অন্যান্য বছর তো এই দিনে (পঞ্চমী) ঠাকুর আসত বাড়িতে। মেয়ের উদ্যোগেই পুজো হত। আর কোনও দিন তো আমাদের বাড়িতে পুজো হবে না... তবে বিচার মিলবে। বিচারের জন্য আমরা চেয়ে আছি।’’

স্বামীর কথায় চোখে জল এল প্রৌঢ়ার। মৃতার মা বললেন, ‘‘আমরা তো সব হারিয়ে ফেলেছি। আর কিছুই হারানোর নেই। অন্যান্য বছর ওরই উদ্যোগে পুজো হত। বাড়িতে গমগম করত লোক। এ বার বাড়িতে থাকতেই পারছি না। তাই এখানে শোকের পুজো কাটাতে বসেছি।’’

আত্মীয়স্বজন প্রত্যেকেই শোকে বিহ্বল। বিচারের দাবির সঙ্গে সঙ্গে শোকজ্ঞাপন— একই মঞ্চে দু’রকম অনুভূতির কথা জানালেন তাঁরা। পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘আজ (মঙ্গলবার) থেকে দশমী পর্যন্ত এই মঞ্চে এসে বসব আমরা। সকালেও থাকব। সন্ধ্যাতেও থাকব। বিচারের জন্য দাবি উঠুক। কিন্তু এই মঞ্চ থেকে রাজনীতি নয়।’’

Dharna
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy