Advertisement
০২ মে ২০২৪
হেনস্থা রুখতে রেলমন্ত্রকে পাঠানো টুইটই এখন হাতিয়ার ভুক্তভোগী যাত্রীদের

জুলুম বন্ধের নির্দেশ বনগাঁতেও

দিন দু’য়েক আগে রানাঘাট থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে ট্রেনের সিটে জলের বোতল সরিয়ে বসতে যান সুশোভন পাল নামে এক চিকিৎসক। রে রে করে তেড়ে আসেন কিছু নিত্যযাত্রী। ওই সিটে বসা যাবে না বলে জানিয়ে দেন।

দৌরাত্ম্য: এ ভাবেই দখল রাখা হয় সিট। বসতে গেলে হেনস্থা হতে হয় অন্য যাত্রীদের। সোমবার ছবিটি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক

দৌরাত্ম্য: এ ভাবেই দখল রাখা হয় সিট। বসতে গেলে হেনস্থা হতে হয় অন্য যাত্রীদের। সোমবার ছবিটি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০২:১৯
Share: Save:

জমে থাকা অভিযোগ উগরানোর জায়গা পেয়ে গিয়েছেন যাত্রীরা।

দিন দু’য়েক আগে রানাঘাট থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে ট্রেনের সিটে জলের বোতল সরিয়ে বসতে যান সুশোভন পাল নামে এক চিকিৎসক। রে রে করে তেড়ে আসেন কিছু নিত্যযাত্রী। ওই সিটে বসা যাবে না বলে জানিয়ে দেন। বিরক্ত হয়ে সুশোভন ট্রেন থেকেই টুইট করেন রেলমন্ত্রকে। তাঁর অভিযোগে হেলদোল কিছু হবে বলে আশা করেননি তিনি। যদিও এক টুইটেই কাজ হয়। রেলমন্ত্রকের কাছ থেকে খবর পৌঁছয় আরপিএফের কাছে। পর দিন কয়েকজন নিত্যযাত্রীকে গ্রেফতার করা হয়।

ওই ঘটনা সংবাদপত্রে পড়ে উৎসাহ পেয়েছেন আরও অনেকে। দীর্ঘ দিন থেকে লোকাল ট্রেনের নিত্যযাত্রীদের সিট বুকিংয়ের বদ অভ্যাস দেখতে দেখতে যাঁরা তিতিবিরক্ত।

বনগাঁ লোকালের যাত্রী পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অভিষেক মণ্ডল। রবিবার রাত ৯টা নাগাদ রেলমন্ত্রককে পর পর দু’টি টুইট করেছেন অভিষেক। বনগাঁ লোকালের কামরায় বেআইনি ভাবে সিট বুকিং, চলন্ত ট্রেনে অন্য যাত্রীদের অসুবিধায় ফেলে তাসের আসর বসানোর কথা জানিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই রেলমন্ত্রক আরপিএফকে পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিয়ে টুইট করেছে বলে জানতে পেরেছেন তিনি।

টুইটের জের- ১

অভিষেক প্রতি দিন বনগাঁ লোকাল ধরে দমদমে যান। ফেরেন সন্ধ্যায়। যাওয়ার সময়ে সিট পেয়ে যান বলে জানালেন। কিন্তু অন্য নিত্যযাত্রীদের সিট বুকিংয়ের ফলে আরও যাত্রীরা নাকাল হন বলে নিজের চোখে দেখছেন অনেক দিন ধরেই। বাড়ি ফেরার পথে অভিষেককেও সমস্যায় পড়তে হয়। তাঁর কথায়, ‘‘শিয়ালদহ থেকে সন্ধ্যা ৬:৫৫ বনগাঁ লোকালে এমনিতেই ভিড় থাকে। তার মধ্যে কিছু নিত্যযাত্রী তাস খেলায় মেতে ওঠেন। ফলে ঠিক মতো দাঁড়ানোর জায়গাও পাওয়া যায় না।’’ সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ বনগাঁ স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল বনগাঁ-মাঝেরহাট লোকাল ট্রেন। কামরার ভিতর সিটের উপরে রাখা ছিল খবরের কাগজ, রুমাল, ছোট ব্যাগ, ছাতা, এমনকী ফুলের মালা। এক যুবক সিট না পেয়ে রেল পুলিশের এক কর্মীকে ডেকে আনলেন। ওই পুলিশ কর্মী এসে কামরার সিট থেকে কয়েকটি খবরের কাগজ নিয়ে গেলেন। বনগাঁ লোকালে বেআইনি ভাবে সিট বুকিং নতুন কোনও ঘটনা নয়। ট্রেনের যাত্রীরা জানান, বছর দু’য়েক আগেও নিত্যযাত্রীদের অনেকেই রীতিমতো দাদাগিরি করে সিট বুকিং করে রাখতেন। এখন দাপট কিছুটা কমেছে। বনগাঁর বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু পালিত রোজ সকালে ট্রেনে দমদম ক্যান্টনমেন্টে যান। তাঁর কথায়, ‘‘ সিট বুকিংয়ের ঘটনা কমেছে। রেল পুলিশ অভিযান চালালে কয়েক দিন পুরো বন্ধ থাকে।’’ যাত্রীরা জানান, বনগাঁ থেকে ট্রেন ছাড়ার পরে সিটে কাগজ রুমাল ছাতা থাকে, কিন্তু কোনও লোকজন থাকে না। চাঁদপাড়া ঠাকুরনগর থেকে লোক উঠে সেখানে বসে। অথচ সিট না পেয়ে অনেককে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। আগে হকারদের কাউকে কাউকে রীতিমতো মাসোহারা দিয়ে সিট বুকিং করানো হত বলেও জানা গেল। তবে ইদানীং সেই প্রবণতা কমেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE