সাপের কামড়ে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা রাজ্যের মধ্যে সব থেকে ভাল বলে নামডাক রয়েছে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের। কিন্তু সম্প্রতি এই হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মী— প্রায় সকলেই সাপ নিয়ে আতঙ্কিত!
অভিযোগ, হাসপাতালের যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে বিষধর সাপ। কখনও ঢুকে পড়ছে বিভিন্ন ওয়ার্ডে। আতঙ্কিত হাসপাতালের কর্মী, রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা।
বর্ষার মরসুম শুরু হতেই চারদিকে সাপের কামড়ের ঘটনা বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ১২-১৫ জন সাপেকাটা রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এঁদের মধ্যে বিষধর চন্দ্রবোড়া, কেউটে ও কালাচের কামড়ের ঘটনা যথেষ্টই আছে।
শুক্রবার হাসপাতালের মাতৃমা ভবনে কেউটে সাপ ঢুকে পড়ে। পড়ে সেটিকে ধরে দূরে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। মাতৃমা ভবনের পাশাপাশি, মহকুমা হাসপাতালের মূল ভবনের আশপাশেও প্রচুর কেউটে সাপ ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে। শনিবার সকালে হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী শুভঙ্কর মণ্ডলকে কামড় দেয় একটি কেউটে। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।
এই ঘটনার পরে আতঙ্ক আরও বেড়েছে হাসপাতাল চত্বরে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্স বলেন, ‘‘হাসপাতালের চারপাশে সাপ ঘুরছে। ভয় লাগছে। দিনের বেলায় প্রচুর লোকজন থাকলেও রাতে হাসপাতালে ডিউটি করতে স্বস্তি বোদ করছি না।’’
হাসপাতালের চারদিকে আগাছা, আবর্জনার স্তূপ। সেই সব জায়গায় সাপেরা আস্তানা তৈরি করেছে। মাঝে মধ্যে সেখান থেকে বেরিয়ে হাসপাতাল ভবন ও আশপাশের এলাকায় ঢুকে পড়ছে। তখনই সাপে-মানুষে সঙ্ঘাত হচ্ছে।
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমরেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘‘বর্ষায় সাপের গর্ত জলে ভরে যায়। নিজেদের আস্তানা হারিয়ে তারা এ দিক ও দিক আস্তানা খুঁজতে থাকে। তখনই সাপে-মানুষে সঙ্ঘাত হয়। তবে এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সাপে কামড়ালে দ্রুত সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হবে। তা হলেই রোগী সুস্থ হয়ে উঠবেন।”
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার পার্থসারথি কয়াল সাপের উৎপাতের কথা মেনে নিয়ে বলেন, ‘‘হাসপাতালের আশপাশের আগাছা, আবর্জনা দ্রুত পরিস্কার কী ভাবে করা যায়, তা দেখা হচ্ছে। সোমবারই এ বিষয়ে স্থানীয় দিঘিরপাড় পঞ্চায়েতকে চিঠি দেব।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)