E-Paper

বার বার খোঁড়াখুঁড়ি ও বৃষ্টি, কঙ্কালসার রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ

স্থানীয় সূত্রের খবর, মাস কয়েক আগে জল সরবরাহের পাইপলাইন বসানোর জন্য রাস্তা খোঁড়া হয়েছিল। তার পরে মাটির নীচ দিয়ে নিকাশি নালা তৈরির জন্য আরও এক বার রাস্তাটি খোঁড়া হয়।

সমীরণ দাস 

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৫ ০৭:০৪
গড়িয়ার গড়াগাছায় বেহাল রাস্তা।

গড়িয়ার গড়াগাছায় বেহাল রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।

এক সময়ে পিচের ঝকঝকে রাস্তা ছিল। এখন পিচের চিহ্নটুকুও নেই। প্রায় এক কিলোমিটার অংশের পুরোটাই এবড়োখেবড়ো। মাটি-পাথর মিলেমিশে রাস্তা বলে কার্যত বোঝাই দায়। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পরিস্থিতি এমনই যে, সাইকেল-বাইক তো দূর, হেঁটেও চলাচল করা যাচ্ছে না। তার উপরে বৃষ্টি হলে অবস্থা আরও ভয়াবহ হচ্ছে। এমনই পরিস্থিতি রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত গড়িয়ার গড়াগাছা এলাকার খেলারাম সর্দার সরণির। কলকাতা পুর এলাকা লাগোয়া এই অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি রাস্তার বেহাল দশায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রের খবর, মাস কয়েক আগে জল সরবরাহের পাইপলাইন বসানোর জন্য রাস্তা খোঁড়া হয়েছিল। তার পরে মাটির নীচ দিয়ে নিকাশি নালা তৈরির জন্য আরও এক বার রাস্তাটি খোঁড়া হয়। পুরসভার তরফে মেরামত করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও তা হয়নি বলেই অভিযোগ। খোঁড়াখুঁড়ির পরে এমনিতেই বেহাল হয়ে পড়ে রাস্তা। তার উপরে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে অবস্থা আরও সঙ্গিন হয়েছে।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা প্রবীর চক্রবর্তী বলেন, “প্রায় আড়াই মাস ধরে আমরা কার্যত ঘরবন্দি। গাড়ি তো চলছেই না, হেঁটেও যাতায়াত করা যাচ্ছে না। ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। রোগীদের নিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে। রাস্তার আশপাশে দোকানগুলির ব্যবসা কার্যত লাটে উঠেছে। পুরসভা কিছুই করছে না।” আর এক বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু রায় বলেন, “বলা হয়েছিল, নিকাশি নালা তৈরির পরে রাস্তা ঠিক করে দেওয়া হবে। কিন্তু কিছুই হয়নি। এখন পুরসভা নানা অজুহাত দিচ্ছে। কখনও বলছে লোক নেই, কখনও বলছে টাকা নেই।” বাসিন্দারা জানান, বেহাল রাস্তার জন্য পুরসভার আবর্জনার গাড়ি পর্যন্ত এলাকায় ঢুকছে না। ফলে, বাড়ি বাড়ি জমছে আবর্জনার স্তূপ।

শুধু এই এলাকাই নয়, রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার অনেক ওয়ার্ডেই বেহাল রাস্তার সমস্যায় জেরবার হচ্ছেন বাসিন্দারা। অভিযোগ, জল সরবরাহের পাইপ বসানোর জন্য রাস্তা খোঁড়ার পরে পুরসভার তরফে মেরামত করা হয়নি।

কেন এই পরিস্থিতি? রাজপুর-সোনারপুর পুরপ্রধান পল্লব দাস বলেন, “পুর এলাকায় জল সরবরাহের একটা বড় প্রকল্প চলছে। জল সরবরাহের পাইপলাইন পাতার জন্য খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে। কোথাও কোথাও নিকাশি নালাও বসানো হয়েছে। তার পরে রাস্তার প্রাথমিক সংস্কারও করা হয়েছে। পাইপলাইন পাতার কাজ শেষ হলে সম্পূর্ণ মেরামত করে দেওয়া হবে।” পুরসভা সূত্রের খবর, সম্প্রতি বেহাল অংশে অস্থায়ী মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে।

পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের পুর পরিষদ সদস্য নজরুল আলি মণ্ডল বলেন, “শীঘ্রই পুর এলাকার মানুষের ঘরে ঘরে জল পৌঁছবে। কাজ প্রায় ৯৫ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। মূল পাইপলাইন পাতার কাজ প্রায় শেষ। ইতিমধ্যে আমাদের ট্রিটমেন্ট প্লান্টে জলও চলে এসেছে। এ বার বাড়ি বাড়ি পাইপলাইনের সংযোগ দেওয়া হবে। তার জন্য নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি করতে হবে। তার পরেই সমস্ত রাস্তা স্থায়ী ভাবে মেরামত করা হবে।” বাসিন্দাদের অবশ্য দাবি, বর্ষার মরসুমে প্রতিটি রাস্তা অন্তত প্রাথমিক মেরামত করে চলাচলের যোগ্য করে দেওয়া হোক।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Garia Road condition

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy