Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কবে সাহায্য দেবে সরকার, প্রতীক্ষা

বসিরহাটের মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি বলেন, ‘‘সর্বত্র ব্লক আধিকারিককে দিয়ে সেই এলাকায় কত বাড়ি এবং দোকান ভাঙচুর হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ সেই খতিয়ান তৈরি না হলে সরকারি ভাবে সাহায্য মেলা অসুবিধাজনক বলে জানাচ্ছে প্রশাসনের একটি সূত্র।

ভাঙচুরের-পরে: ফাইল চিত্র

ভাঙচুরের-পরে: ফাইল চিত্র

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৭ ০১:৫৯
Share: Save:

লুঠপাট, ভাঙচুর, আগুন লাগার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় দু’সপ্তাহ। কিন্তু এখনও মেরামত হল না অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত দোকান।

বসিরহাটের পাইকপাড়া, ত্রিমোহণী, কলেজপাড়া, হরিশপুর, মির্জাপুর, তেঁতুলিয়া, স্বরূপনগরের বহু দোকানি জানান, আর্থিক দূরবস্থার কারণে তাঁদের পক্ষে দোকানগুলি মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই দোকান খোলা যাচ্ছে না। তা ছাড়া, অশান্তির ফলে দোকানের অনেক মালপত্রও নষ্ট হয়েছে। নতুন করে মালপত্র এনে ফের ব্যবসা শুরু করতে হবে। যা ব্যয়সাপেক্ষ। সরকারি সাহায্য ছাড়া কোনও ভাবে দোকান চালু করা সম্ভব নয় বলে তাঁরা জানান।

বসিরহাটের মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি বলেন, ‘‘সর্বত্র ব্লক আধিকারিককে দিয়ে সেই এলাকায় কত বাড়ি এবং দোকান ভাঙচুর হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ সেই খতিয়ান তৈরি না হলে সরকারি ভাবে সাহায্য মেলা অসুবিধাজনক বলে জানাচ্ছে প্রশাসনের একটি সূত্র।

কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, এ ভাবে সংসার চালানো দায় হয়ে যাচ্ছে বলে জানালেন বহু দোকান মালিক। এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘সংসার চালানোর একমাত্র অবলম্বন এই দোকান। তা দু’সপ্তাহের মতো বন্ধ। এ ভাবে আর চলছে না।’’ অনেকেরই বাড়িতে হাঁড়ি না চড়ার মতো অবস্থা দাঁড়াচ্ছে। বসিরহাটের ত্রিমোহণী মোড়ে একটি মোটরবাইকের শো রুমে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। বহু লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ওই ব্যবসায়ীর। বুধবার সেখানে গিয়ে পুলিশ তদন্ত করে জানায়, পেট্রোল বোমা ছোড়ার ফলে আগুন ধরে। শো রুমের মালিক বলেন, ‘‘এখনও কোনও টাকা-পয়সা পাইনি।’’ বিশেষ করে যাঁরা ঋণ নিয়ে দোকান চালাচ্ছেন, তাঁরা পড়েছেন বেশি সমস্যায়। কিস্তি মেটানোর সময় চলে আসছে। অথচ উপার্জনের পথ বন্ধ।

বাদুড়িয়ার এক ছাত্রের একটি ফেসবুক পোস্ট থেকে ৩ জুলাই অশান্তি ছড়িয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট, বাদুড়িয়া-সহ কিছু এলাকায়। তার জেরেই লুঠপাট, ভাঙচুর চালানো হয়েছিল এলাকার বহু দোকানে। কিছু ক্ষেত্রে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়।

তবে উত্তেজনা কাটিয়ে বসিরহাট এখন শান্ত। সম্প্রীতির বার্তা দিতে গ্রামে গ্রামে শান্তি বৈঠক ও রাখিবন্ধন অনুষ্ঠান হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কাতর আবেদন, শান্তি বৈঠকের পাশাপাশি তাঁদের কথাটাও একটু ভাবুক সরকার।

প্রশাসন সূত্রের খবর, স্বরূপনগরের প্রশাসন এবং সর্বদলীয় বৈঠকে তেঁতুলিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের আর্থিক সাহায্যের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অন্য জায়গার মানুষেরাও এই আলোচনার প্রতীক্ষায় রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE