Advertisement
E-Paper

ঝাঁটা-জুতো হাতে চড়াও এলাকার লোক

পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল দে অবশ্য ক্ষতিপূরণের টাকা বিলি নিয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ০৩:১১
নিগ্রহ: জনরোষের মুখে পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে

নিগ্রহ: জনরোষের মুখে পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে

আমপানে ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের ভুরি ভুরি অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির নানা প্রান্তে প্রতিদিনই চলছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। কখনও কান ধরতে বাধ্য করা হচ্ছে পঞ্চায়েত সদস্যকে, কখনও ভাঙচুর চলছে পঞ্চায়েতে। ঘেরাও, অবরোধ তো রয়েইছে।

এ বার বনগাঁর ধর্মপুকুরিয়া পঞ্চায়েতের এক সদস্যের ছেলেকে চড়-থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে ওই পঞ্চায়েতের সুকপুকুর এলাকায়। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে ঝাঁটা-জুতো হাতে চড়াও হন এলাকার লোক। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন মহিলা।

পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল দে অবশ্য ক্ষতিপূরণের টাকা বিলি নিয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দুর্নীতির অভিযোগ কেউ প্রমাণ করতে পারলে তাঁকে ধন্যবাদ জানাব। আমার নিজের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি টাকা নিইনি। এলাকার সব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, বিজেপির লোকজন আমার ছেলে উত্তমকে মারধর করেছে।

বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ টাকা না পেয়ে তাঁদের দাবি জানাতে গিয়েছিলেন। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।’’

পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন গ্রামের মহিলা-পুরুষেরা গোপালের বাড়িতে গিয়ে ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে, এই দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের হাতে ঝাঁটা, জুতো ছিল। সে সময়ে গোপালের ছেলে উত্তমকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উর্মিলা পাল বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ আমরা টাকা পাইনি। উল্টে যাদের পাকা বাড়ির কোনও ক্ষতি হয়নি, তারা টাকা পেয়ে গিয়েছে। আমরা এ দিন ক্ষতিপূরণের দাবি জানাতে এসেছিলাম।’’ বিক্ষোভকারীদের দাবি, ঘর ভাঙেনি, অথচ একই পরিবারের দু’জনের নামেও টাকা ঢুকেছে। ওই টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে গ্রামের সব পরিবারকে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে।

পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলেকে মারধরের বিষয়ে মহিলারা জানিয়েছেন, উত্তম তার মাকে মারধর করছিল। তাই লোকজন উত্তেজিত হয়ে প্রতিবাদ করেন।

ধর্মপুকুরিয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুকদেব শিকারি বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্তদের একটা তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বাড়ির লোকজন টাকা পেয়ে গিয়েছেন। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বাড়ির মালিকেরা ব্লকের কোথাও এখনও আর্থিক সাহায্য পাননি। কোথাও কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকলে তদন্ত করে পদক্ষেপ করা হবে।’’

গোপাল অবশ্য স্বীকার করেছেন, একটি পরিবার ‘ডবল টাকা’ পেয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওটা শুধরে নেওয়া হচ্ছে।’’

আমপানের টাকা নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের নন্দকুমার পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য প্রশান্ত মাইতির বাড়িতেও বৃহস্পতিবার বিক্ষোৈভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। জগন্নাথচক গ্রামের ওই পঞ্চায়েত সদস্য বিক্ষোভকারীদের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয় মানুষ। বলেন, ‘‘আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, তাঁদের টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা করব।’’ তৃণমূল নেতা শান্তনু বাপুলি বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। ব্লকে সর্বদল বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও টাকা পেয়েছেন, তাঁরা টাকা ফেরত দেবেন। একই পরিবারে একাধিক সদস্য টাকা পেয়ে থাকলেও তাঁরা ফেরত দেবেন।’’

Cyclone Amphan Ration Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy