E-Paper

পুণ্যার্থীদের ঢল গঙ্গাসাগরে

মঙ্গলবার বিকেল থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে। এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে তো বটেই, ভিন্ রাজ্যের বহু মানুষও এসেছেন।

সমরেশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৭:৩৭
গঙ্গাসাগরে ভিড়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র 

গঙ্গাসাগরে ভিড়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র 

মাঘী পূর্ণিমায় পুণ্যস্নান সারতে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছে গঙ্গাসাগরে। কার্যত নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে এলাকা।

এ বছর দুর্ঘটনায় একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল কুম্ভমেলায়। সে ধরনের পরিস্থিতি আটকাতে বাড়তি সতর্ক সুন্দরবন জেলা পুলিশ ও সাগর ব্লক প্রশাসন। মঙ্গলবার সন্ধে ৬টা ৫৫ মিনিটের পর শুরু হয়েছে মাঘী পূর্ণিমা। বুধবার সন্ধে ৭টা বেজে ৬ মিনিট পর্যন্ত ‘পুণ্যযোগ’।

মঙ্গলবার বিকেল থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে। এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে তো বটেই, ভিন্ রাজ্যের বহু মানুষও এসেছেন। রাত ১২টাতেও সমুদ্রস্নানে নেমেছেন অনেকে। তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষা ও সুবিধার জন্য সাগর ব্লক প্রশাসন ও সুন্দরবন পুলিশ একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে। সাগরের বিডিও কানহাইয়া কুমার রায় জানান, অন্যান্য বারের তুলনায় ভিড় অনেক বেশি। সে কথা মাথায় রেখেই আলো, শৌচালয়, বার্জ ও ভেসেল পরিষেবা বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, মাঘী পূর্ণিমার স্নান উপলক্ষে এ বছর কচুবেড়িয়া, গঙ্গাসাগর ও বেণুবনে শৌচালয়ের সংখ্যা বাড়িয়ে ৭০০টি করা হয়েছে। গত বার এই সংখ্যা ছিল সাড়ে তিনশোর কিছু বেশি। এ ছাড়াও গঙ্গাসাগরে যাতায়াতের জন্য মুড়িগঙ্গা নদী পারাপার করতে ১২টি ভেসেল
ও দু’টি বার্জ রয়েছে। গঙ্গাসাগরে ১২টি, কচুবেড়িয়ায় পাঁচটি ও বেণুবনে একটি পানীয় জলের পাউচের ‘কিয়স্ক’ রয়েছে। কচুবেড়িয়া থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য ৪০টি বেসরকারি বাসের বন্দোবস্ত হয়েছে। সমস্ত স্নানের ঘাট, সমুদ্র সৈকতের ২ নম্বর রাস্তা ও কে-ওয়ান বাসস্ট্যান্ডে হাইমাস লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রয়েছে ‘বাফার জ়োন’। সমুদ্রতট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে রাখা হয়েছে ‘সাগর প্রহরী’দের। বিডিও আরও জানান, ১, ৪ ও ৫ নম্বর স্নানঘাটে পুণ্যার্থীদের সুরক্ষায় দু’শোর বেশি সিভিল ডিফেন্স কর্মী ও পুলিশ কর্মী আছেন। স্নানের ঘাট, কপিলমুনির মন্দিরের সামনে, কে-ওয়ান বাসস্ট্যান্ড ও আরও কিছু এলাকায় ১৫টি সিসি ক্যামেরা বসেছে। সাগর ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে এসেছেন। সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, ‘‘মাঘী-স্নান উপলক্ষে এ বার ১০০০ পুলিশ কর্মীকে গঙ্গাসাগর, কচুবেড়িয়া ও বেণুবন এলাকায় তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। সমুদ্রসৈকত ও কপিলমুনির মন্দির সংলগ্ন এলাকা জুড়ে চলছে কড়া নজরদারি। তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন জায়গায় বাঁশের ব্যারিকেড আছে। সব মিলিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে গঙ্গাসাগর মেলার পরে মাঘী-স্নানেও সরগরম পূণ্যতীর্থ গঙ্গাসাগর। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত থেকে এসেছিলেন সঞ্জয় জানা। বললেন, ‘‘মহাকুম্ভে যাব বলে টিকিট করেছিলাম। কিন্তু পদপিষ্ট হয়ে পুণ্যার্থীদের মৃত্যু হওয়ায় সে পরিকল্পনা বদলে গঙ্গাসাগরে এসেছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Magha Purnima ganga sagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy