Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

এখনও হাতে হাতে ঘুরছে প্লাস্টিক

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাসে সমস্ত ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বৈঠক করেন। সেখানেই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছিল।

কল্যাণগড় বাজারে ক্যারিব্যাগ। ছবি: শান্তনু হালদার

কল্যাণগড় বাজারে ক্যারিব্যাগ। ছবি: শান্তনু হালদার

সীমান্ত মৈত্র
অশোকনগর শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

সকাল সাড়ে ৯টা। অশোকনগরের অন্যতম বড় বাজার, কল্যাণগড় বাজারে গিয়ে দেখা গেল, প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে মাছ ও আনাজ কিনে বাড়ির পথে হাঁটা দিচ্ছেন অনেকে। না চাইতেই দোকানিদের কাছে মিলছে ক্যারিব্যাগ।

যদিও অশোকনগর–কল্যাণগড় পুরসভার তরফে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে প্লাস্টিক ও থার্মোকল ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাসে সমস্ত ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বৈঠক করেন। সেখানেই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছিল। ওই বৈঠকের পরে এলাকার সমস্ত বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুরসভার তরফে মাইকে প্রচার চালানো হয়। ব্যানার-পোস্টার-ফ্লেক্স সাঁটিয়ে প্লাস্টিক বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা শহরবাসীকে জানানো হয়। পুরসভার পক্ষ থেকে তিরিশ হাজার কাপড়ের ক্যারিব্যাগ কেনা হয়। তা এলাকার ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ ও দোকানিদের মধ্যে বিলি করা হয় বিনামূল্যে। পুরপ্রধান নিজে পুর প্রতিনিধিদের নিয়ে বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের বোঝান। প্লাস্টিক ব্যবহারের ফলে পরিবেশ ও শরীরের ক্ষতি নিয়ে বোঝান তাঁরা। প্লাস্টিকের ফলে নিকাশি বন্ধ হয়ে ডেঙ্গি-মশার আঁতুরঘর তৈরি হচ্ছে বলে জানানো হয়। সাম্প্রতিক সময়ে পুর এলাকায় জ্বর ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছিল। জ্বর-ডেঙ্গিতে কয়েক জনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছিল। থার্মোকলের ব্যবহারের কুফল নিয়েও মানুষকে সচেতন করা হয়।

পুরসভার দাবি, নিকাশি নালা নিয়মিত পরিস্কার করা হলেও মানুষ প্লাস্টিক ও থার্মোকল ব্যবহার বন্ধ না করলে সমস্যা পুরো মিটবে না।

সেই সচেতনতা এখনও আসেনি, পরিস্থিতি বলছে সে কথাই।

গোলবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বাজারের একাংশের দোকানিরা গোপনে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করছেন। বাজারের নিকাশিও বেহাল। নোরাং আবর্জনার মধ্যে প্লাস্টিক পড়ে থাকতে দেখা গেল। গোলবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গুপী মজুমদার বলেন, ‘‘বাজারে বারোশো দোকানি রয়েছেন। সকলকে বলে দেওয়া হয়েছে, কেউ যেন প্লাস্টিক ব্যবহার না করেন। তাঁদের মধ্যে প্রচারও করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৬টি দোকানে তল্লাশি চালিয়ে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ আটক করা হয়েছে। কেউ প্রকাশ্যে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করেন না। গোপনে কেউ করলে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’’ কল্যাণগড় বাজারের এক দোকানি বলেন, ‘‘কাপড়ের ব্যাগের দাম বেশি। ক্রেতা বাড়তি দাম দিতে চান না। ফলে প্লাস্টিক ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছি।’’ কয়েকজন ক্রেতার আবার যুক্তি, কাপড়ের ব্যাগ সব সময়ে হাতের কাছে থাকে না। তা ছাড়া, কোনও ধরপাকড় তো হয় না। তাই গোটা ব্যাপারটাই ঢিলেঢালা।

শাস্তির বিধি আছে বলে জানাচ্ছে পুরসভা। পুরপ্রধানের বক্তব্য, ‘‘প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিয়ে ধরা পড়লে দোকানিদের ২৫০ টাকা ও ক্রেতাদের ১০০ টাকা জরিমানা করা হবে। তবে তার আগে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Plastic bag Ashoknagar Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE