Advertisement
E-Paper

টাকা ফেরত চাইতেই বিপদ, মদ খেয়ে খুন সহকর্মীকে

পুলিশের দাবি, খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বছর ছাব্বিশের রাজা কমলবাবুর সহকর্মী। খুনের আগে সে কমলবাবুর সঙ্গে মদ খেয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৯ ০০:৪৮
কমল দাস।

কমল দাস।

ঘণ্টা দু’য়েক আগে তাঁর সঙ্গেই বসে মদ খেয়েছিল সে। একই কারখানার কর্মী তাঁরা। সঙ্গে ছিল তাদের আর এক বন্ধু। সেই আসর ভাঙার দু’ঘণ্টা পরে খুন হয়ে যান ব্যারাকপুর মণিরামপুরের কমল দাস (৫৭)। ওই ঘটনায় ব্যারাকপুর থানার পুলিশ রবিবার চার জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতেরা হল মহম্মদ রাজা, মহম্মদ বান্টি, মহম্মদ রশিদ ও আরমান আমন। সকলেই টিটাগড়ের বাসিন্দা।

পুলিশের দাবি, খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বছর ছাব্বিশের রাজা কমলবাবুর সহকর্মী। খুনের আগে সে কমলবাবুর সঙ্গে মদ খেয়েছিল। বাকি তিন জনকে নিয়ে এসেছিল রাজাই। তদন্তকারীদের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতেরা জানিয়েছে, লুটপাট করাই ছিল তাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য। পুলিশের অনুমান, কমলবাবু সম্ভবত তাদের চিনে ফেলেন। সেই জন্যই গলার নলি কেটে তাঁকে খুন করে রাজারা। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে অভিযুক্তদের ধরা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে কমলবাবুর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া কিছু জিনিস উদ্ধার হয়েছে।

টিটাগড়ের একটি চটকলে কাজ করতেন কমলবাবু। থাকতেন গোয়ালাপাড়ায় নিজের একতলা বাড়িতে। পাশাপাশি থাকেন তাঁর অন্য আত্মীয়েরা। রাতে ডিউটি থাকলে কাকিমা শিবানী দাসের সঙ্গে দেখা করে যেতেন কমলবাবু। মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেও তিনি কাকিমার সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু সেই রাতে কমলবাবু ডিউটিতে যাননি। খুনের তদন্তে নেমে এই তথ্য পায় পুলিশ। পাশাপাশি, কমলবাবুর দু’টি মোবাইলই চুরি গিয়েছিল। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) কে কান্নন বলেন, “সেই ফোনের কল ডিটেল্‌স দেখে রাজার খোঁজ মেলে। জানা যায়, মঙ্গলবার সে বেশ কয়েক বার কমলবাবুকে ফোন করেছিল।”

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জেরায় রাজা জানিয়েছে, সে কমলবাবুর থেকে কিছু টাকা ধার নিয়েছিল। কিন্তু সময় মতো তা ফেরত দিতে পারেনি। কয়েক বার সময় চেয়েও টাকা মেটায়নি সে। ফলে রাজার সঙ্গে কমলবাবুর সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। সোমবার কমলবাবু রাজাকে বলেছিলেন, সে যেন মঙ্গলবার তাঁকে কিছু টাকা অন্তত ফেরত দেয়। মণিরামপুরেরই একটি হোটেলে দুপুরে খেতে আসতেন কমলবাবু। কথা মতো মঙ্গলবার দুপুরে সেখানে গিয়ে রাজা তাঁকে কিছু টাকা ফেরতও দেয়। এর পরে সন্ধ্যায় কাজে বেরোনোর সময়ে রশিদকে নিয়ে কমলবাবুর বাড়িতে হাজির হয় সে। উদ্দেশ্য ছিল কমলবাবুকে শায়েস্তা করা।

পুলিশ জানিয়েছে, রাজা কমলবাবুকে বলে, তারা একসঙ্গে বসে মদ খাবে। মদ নিয়ে গিয়েছিল রাজাই। সে, রোশন এবং কমলবাবু একসঙ্গে বসে মদ খায়। ইচ্ছে করেই কমলবাবুকে বেশি মদ খাইয়ে দেয় বাকিরা। তিনি প্রায় বেহুঁশ হয়ে পড়লে রাজারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ঘণ্টা দু’য়েক পরে আরমান এবং বান্টিকে সঙ্গে নিয়ে ফের কমলবাবুর বাড়িতে হাজির হয় রাজা।

তারা আলমারি খুলে এবং আসবাব ভেঙে সোনার গয়না, নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে। এর মধ্যেই কমলবাবুর জেগে গিয়ে রাজাকে চিনে ফেলেন। তখনই তাঁর উপরে চড়াও হয় তিন জন। এ রকম সম্ভাবনার কথা ভেবে সঙ্গে ক্ষুর নিয়ে গিয়েছিল রাজা। পিছন থেকে সে কমলবাবুর গলায় ক্ষুর চালায়। ওই অবস্থায় পালানোর চেষ্টা করেন কমলবাবু। তখন রাজা ফের ক্ষুর চালিয়ে তাঁর গলার নলি কেটে দেয়। পালানোর সময়ে বাড়ির বাইরের গেটে সে ভিতর দিয়ে তালা মেরে গিয়েছিল। মোবাইলের সূত্র ধরে পুলিশ রবিবার প্রথমে রাজাকে ধরে। তাকে জেরা করে গ্রেফতার করা হয় বাকিদের।

Barrackpore Murder Crime ব্যারাকপুর খুন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy