Advertisement
০৮ মে ২০২৪
ফেসবুকে নিজের অশ্লীল ছবি দেখেছিল আত্মঘাতী নাবালিকা
Suicide

Suicide: পড়ুয়া আত্মহত্যার ঘটনায় অধরা অভিযুক্ত

তদন্তে সাইবার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। খুব শীঘ্রই অভিযুক্তকে ধরা যাবে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২১ ০৭:৪২
Share: Save:

ঢোলাহাটের মেধাবী ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনার ১০ দিন পরেও অভিযুক্ত যুবকের সন্ধান পেল না পুলিশ। তবে ওই যুবকই যে ছাত্রীর নামে ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে তার অশ্লীল ছবি সেখানে পোস্ট করেছিল সে সম্পর্কে নিশ্চিত পুলিশ। তদন্তে সাইবার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। খুব শীঘ্রই অভিযুক্তকে ধরা যাবে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিগুলি প্রকাশ্যে আসার পরে গত ৩ জুলাই গামছার ফাঁসে জীবন শেষ করে বছর পনেরোর পূর্বাশা পাল (নাম পরিবর্তিত)। তার পরিবারের অভিযোগ, বছর তিনেক আগে পূর্বাশাকে অপহরণ করে চার-পাঁচ দিন আটকে রেখেছিল পড়শি ওই যুবক। পূর্বাশার বাবার দাবি, ‘‘তখনই মেয়ের নানা মুহূর্তের ছবি তুলে রেখেছিল ছেলেটা। বিয়ে করতে চেয়ে বেশ কিছু দিন ধরে জোর করছিল সে। মেয়ে রাজি না হওয়ায় তার নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে ছবিগুলি সে পোস্ট করে দেয়।’’

সুন্দরবন জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্তে এক সাইবার বিশেষজ্ঞের পরামর্শও নেওয়া হচ্ছে।’’ পূর্বাশার বাবা বলেন, ‘‘আমার মেয়ে বারবার ওই ছবিগুলি ফেসবুক থেকে মুছে দিতে বলেছিল ছেলেটাকে। কিন্তু, সে কিছুই শোনেনি। ওর বাবা-মায়ের কাছেও আমরা অনুরোধ করেছিলাম। তাতেও ফল হয়নি। ওই সব ছবি দেখে অনেকে আমার মেয়ের উদ্দেশে নানা মন্তব্য করেছিল। তার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।’’

সুন্দরবনের পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘ঘটনাটিকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। সেই কারণে থানার আইসি-কেই তদন্তকারী আধিকারিক করা হয়েছে। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। অভিযুক্ত যুবকই যে মেয়েটির নামে ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছিল, তা নিয়ে আমরা নিশ্চিত। বিচারে অভিযুক্তের যাতে সাজা হয়, তার জন্য তদন্তে কোনও কসর বাকি থাকছে না।’’

দশম শ্রেণির পড়ুয়া পূর্বাশা বরাবরই লেখাপড়ায় বেশ ভাল ছিল। পেশায় মৎস্যজীবী তার বাবার কথায়, ‘‘প্রত্যেক বছর স্কুলে সেরা বারো জন পড়ুয়ার মধ্যে জায়গা পেত মেয়ে। ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে সরকারি চাকরি করে পরিবারের দুঃখ দূর করবে। পূর্বাশাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম আমরা। মেয়ের মৃত্যুর পরে সে সব চুরমার হয়ে গিয়েছে।’’

গত ৩ জুলাই সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজনের সঙ্গেই বসেছিল পূর্বাশা। তার বাবার কথায়, ‘‘আমি নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করে যে পয়সা পাই, তা দিয়েই সংসার চলে। সেদিন মেয়ে মাছের মুড়ো খাবে বলেছিল। ওর পছন্দ মতো রান্না হচ্ছিল। হঠাৎ ওকে বাড়িতে না দেখে খুঁজতে বেরোই। বাড়ির বাইরে একটি গাছে টর্চের আলো ফেলে দেখি ডাল থেকে ঝুলছে মেয়ের দেহ।’’ পূর্বাশার আত্মহত্যার পরে তার পরিবার পড়শি ওই যুবকের বিরুদ্ধে ঢোলাহাট থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suicide Facebook
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE