বিরোধীরা ‘অশান্তি’ করার চেষ্টা করলে জবাব দেবে পুলিশ। এমনই জানিয়ে দিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সোমবার পুরভোটের প্রচারে বসিরহাটে এসেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। তাঁর নেতৃত্বে বিশাল মিছিল বেরোয়। মন্ত্রী দাবি করেন, ‘‘কলকাতার মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তৃণমূল প্রার্থীদের উজাড় করে ভোট দিয়েছেন। মহকুমা শহরের উন্নয়নের জন্য মানুষ একই ভাবে তৃণমূল প্রার্থীদের বেছে নেবেন।’’ তাঁর দাবি, তাই সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি যতই জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই করে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করুক না কেন, বুথে থাকা পুলিশ তার যথাযোগ্য উত্তর দেবে।
এমন ঘোষণায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিরোধীরা। দলীয় প্রার্থী অসিত মজুমদারের সমর্থনে স্টেশনপাড়ায় প্রচারে এসে কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘কলকাতা কর্পোরেশনের থেকেও সামনের ভোট আরও ভয়ঙ্কর হবে।’’ মান্নান দাবি করেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন এবং তৃণমূল এক হয়ে কাজ করছে।’’ নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়কেও তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। বিরোধীদের অভিযোগ, উত্তর ২৪ পরগনার ২৩টি পুরসভাতেই আক্রান্ত তাঁরা। কোথাও ফ্লেক্স-ব্যানার ছেঁড়ার অভিযোগ তো কোথাও প্রার্থীকে হুমকি দেওয়ার নালিশ— ঘুরে ফিরে এমন নানা অভিযোগ তুলছেন। ভোটের দিন এজেন্ট দেওয়া যাবে না— এই হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়েছে রাজারহাট, বিধাননগর এলাকায়। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের কথাই ধরা যাক। ১৪টি পুরসভায় ভোট হচ্ছে এখানে। অভিযোগের সংখ্যা প্রায় ৮০। যার মধ্যে বেশির ভাগই হুমকি, প্রচারে বাধাদান, ফ্লেক্স ছেঁড়ার মতো ঘটনা। হালিশহর, ভাটপাড়া, কাঁচরাপাড়া, গারুলিয়া, নৈহাটি, উত্তর ব্যারাকপুর— অভিযোগ আসছে সব জায়গা থেকেই। বিরোধীদের বক্তব্য, অভিযোগের সংখ্যাটা আরও বেশি।
গোবরডাঙা পুর এলাকায় তৃণমূল ও অন্য বিরোধী দলগুলি মোট ১১টি অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশের কাছে। সব ক্ষেত্রেই তদন্ত চালিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বনগাঁ পুরসভায় বড় ঘটনাটি ঘটেছে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। তৃণমূলের নেতা মনোতোষ নাথ এখানে নির্দলের হয়ে দাঁড়িয়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন। কিন্তু তাঁর জনপ্রিয়তা চাপে রেখেছে শাসক দলকে। মনোতোষবাবু ও তাঁর নির্বাচনী এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কিন্তু দিন কয়েক আগে ওই ঘটনার পর থেকে কেউ গ্রেফতার হয়নি এখনও।
কংগ্রেসের এক জেলা নেওয়া বলেন, ‘‘পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল যদি সন্ত্রাসের চেষ্টা করে, তা হলে সাধারণ মানুষই ঘুরে দাঁড়াবেন। আগুন জ্বলবে।’’
বিরোধীদের বক্তব্য শুনে জ্যোতিপ্রিয়বাবু মুচকি হেসে বলেন, ‘‘ওদের ওদের মতো বলতে দিন। ওরা নিজেদের মতো করে গুটিয়ে গিয়েছে...।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy