নার্সিংহোমে এক বিজেপি কর্মীর বাবার মৃত্যু নিয়ে রাজনৈতিক কাজিয়া চলল তিন দিন ধরে। বিজেপি কর্মী প্রথমে থানায় অভিযোগ করলেন চিকিৎসায় গাফিলতির। পরে অভিযোগ ফিরিয়ে নিয়ে ফের অভিযোগ করলেন, পুলিশ ও নার্সিংহোম তাঁকে চাপ দেওয়ায় তিনি বাধ্য হয়ে অভিযোগ ফিরিয়েছেন। এই ঘটনায় বিজেপি-র মুখপাত্র তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর ‘কুকথা’ নিয়ে ক্ষিপ্ত চিকিৎসক সংগঠন চিকিৎসকদের নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে অভিযোগ করেছিল মুখ্যসচিবকে। যার পরে পুলিশ কৌস্তভকে সমন পাঠিয়েছে আজ, শুক্রবার ব্যারাকপুর কমিশনারেটের মোহনপুর থানায় হাজিরা দেওয়ার জন্য। বিজেপি মুখপাত্র অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি পূর্ব-নির্ধারিত মামলা ও রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে থানায় যেতে পারবেন না। ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক ওই নার্সিংহোমে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার বার্তা দেন।
ব্যারাকপুর-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ওয়্যারলেস মোড়ের ওই নার্সিংহোমে গত মঙ্গলবার রাতে ব্যারাকপুরের পূর্ব চাঁদমারির বাসিন্দা কার্তিক দাসের বাবা দীনেশ দাসের মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে প্যাকেজ ব্যবস্থায় জোরাজুরি করা ও চিকিৎসায় গাফিলতির। দলীয় কর্মীর বাবার মৃত্যুতে বুধবার সেখানে গিয়ে চিকিৎসকদের কুকথা বলার অভিযোগ ওঠে কৌস্তভের বিরুদ্ধে। ভাইরাল ভিডিয়োয় (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) দেখা যায়, নার্সিংহোমে ঢুকে চিকিৎসককে গালিগালাজ করছেন তিনি। এই ঘটনায় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম’ মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে ইমেলে অভিযোগ জানায়। কৌস্তভ দাবি করেন, তিনি কাউকে গালিগালাজ করেননি। তিনি বলেন, ‘‘মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের নামে চলা নার্সিংহোম শুধু ব্যবসা করছে, মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। তারই প্রতিবাদ করেছি।’’
কার্তিক বলেন, ‘‘চিকিৎসায় গাফিলতি ঘটেছে। পরে নার্সিংহোমের তরফে বিশ্বজিৎ রায় আমাকে টাকার লোভ দেখিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলেন। ময়না তদন্তে দীর্ঘসূত্রতার ভয় দেখানো হয়। তাই প্রথমে অভিযোগ ফিরিয়ে নিই।’’ যদিও বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘দুটো হাসপাতাল ঘুরে ওই রোগী এসেছিলেন। তাঁদের পারিবারিক চিকিৎসকই আমাদের নার্সিংহোমে দেখছিলেন। এক জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের এই আচরণ আমাকে মর্মাহত করেছে। আমাদের ক্যাথল্যাব থেকে আইসিইউ, সব জায়গায় চিকিৎসক থেকে রোগী, সবাইকে ভয় দেখানো হয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)