Advertisement
E-Paper

বিদ্যুৎ ফেরেনি এখনও, দুর্ভোগ

একে ঝড়ের তাণ্ডব, তার উপরে শুরু হয়েছে দফায় দফায় বৃষ্টি। সব মিলিয়ে হাবরা-অশোকনগরে ত্রাণ শিবিরে বাড়ছে আশ্রিতের সংখ্যা। বুধবার সকালে প্রবল ঝড়ের মুখে পড়ে হাবরা ও অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য বাড়িঘর ভেঙেছে।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য ও সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৫ ০১:৩৯

একে ঝড়ের তাণ্ডব, তার উপরে শুরু হয়েছে দফায় দফায় বৃষ্টি। সব মিলিয়ে হাবরা-অশোকনগরে ত্রাণ শিবিরে বাড়ছে আশ্রিতের সংখ্যা।

বুধবার সকালে প্রবল ঝড়ের মুখে পড়ে হাবরা ও অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য বাড়িঘর ভেঙেছে। বহু গাছ পড়েছে। এখনও বিদ্যুৎবিহীন বিস্তীর্ণ এলাকা। জখম হয়েছিলেন বেশ কয়েক জন। ঘটনার পরে ওই দিনই দুই পুর এলাকায় চারটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছিল। সেখানে শ’খানেক মানুষ আশ্রয় নেন। অনেকে ভাঙাচোরা ঘরেই রাত কাটিয়েছেন। বাস্তুভিটে ছাড়তে মন চায়নি। তার উপরে চুরি-ছিনতাইয়ের আশঙ্কাও ছিল।

কিন্তু বাধ সাধল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। বুধবার ঝড়ের পরে বৃষ্টি ধরেছিল। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি নাকাল করেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে। সরকারি হিসেবে আপাতত ৩৭০ জন আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরগুলিতে।

বৃহস্পতিবার এলাকা আসেন আলিপুর হাওয়া অফিসের দুই বিশেষজ্ঞ। ক্ষয়ক্ষতির নিদর্শন খতিয়ে দেখেন তাঁরা। গণেশ দাস নামে প্রতিনিধি দলের এক সদস্য পরে জানান, নির্দিষ্ট একটি এলাকায় ঝড় তৈরি হয়েছিল। গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার। ঝড়ের দৈর্ঘ্য ছিল ৫ কিলোমিটার জুড়ে। চওড়ায় ছিল ২০০-৩০০ মিটার। ৩৩০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে ঝড় বয়ে গিয়েছে।

জেলাশাসক মনমীত কৌর নন্দা জানান, ত্রাণ ও পুনর্বাসনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার বৃষ্টিতে নতুন করে ক্ষয়ক্ষতি কিছু হয়নি।

ক্ষয়ক্ষতি না হলেও বাড়িঘর ভেঙেছে যাঁদের, তাঁদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে বৃষ্টি। কাজলার রবীন্দ্র শিক্ষা নিকেতনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী লক্ষ্মী বিশ্বাস। ওই স্কুলেরই ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে তাদের গোটা পরিবার। লক্ষ্মীর কথায়, ‘‘আগে স্কুলে কয়েক ঘণ্টা থাকতে হতো। এখন তো রাতও কাটাতে হচ্ছে। তবে স্যাররা নিজেরা খাবার-দাবার পরিবেশন করছেন দেখে একটু সংকোচ হচ্ছে।’’

ত্রাণ শিবিরে উঠেছেন সাবিত্রী মজুমদার। ঝড়ের স্মৃতি এখনও টাটকা। বললেন, ‘‘সে সময়ে বাড়িতে একাই ছিলাম। খাটের তলায় লুকিয়ে পড়ি। আর হুড়মুড় করে খাটের উপরে ধসে পড়ে ইট, টিনের চাল। কোনও মতে ইষ্টনাম জপতে জপতে এ যাত্রা প্রাণে বেঁচেছি।’’ তিনি জানালেন, ঘরবাড়ি ভাঙা। কিন্তু বৃষ্টিতে সেখানে আর থাকার উপায় নেই। স্বামী লিটন ত্রাণ শিবির থেকেই বার বার গিয়ে বাড়ি দেখাশোনা করে আসছেন।

কৃষ্ণ দে নামে এক ব্যক্তি জানালেন, ত্রাণ শিবিবরে পরিবার-পিছু ১০ কিলো চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি সর্ষের তেল এবং একবেলা রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। ত্রাণের কাজ দেখভাল করতে দেখা গেল মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে।

এ দিকে বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধের পর থেকে গোটা এলাকায় ঘুটঘুটে অন্ধকার। ১২০টি ভেঙে পড়া বিদ্যুতের খুঁটির মধ্যে মাত্র ৬০টি আপাতত খাড়া করা গিয়েছে। কিন্তু সেখানেও সংযোগ দেওয়া যায়নি। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে বলে দফতর সূত্রের খবর। অশোকনগর বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র প্রদ্যুতি সরকার জানালেন, অনেক জায়গায় গাছ কেটে তারের উপরে পড়েছিল। আগে গাছ সরিয়ে তারপরে লাইনে কাজ করতে বাড়তি সময় লাগছে।

Ashoknagar Habra Power supply Lakshimi nagar south bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy