Advertisement
E-Paper

কুকুর পিটিয়ে মারার প্রতিবাদ, মার তরুণীকে

পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ওই এলাকার বাসিন্দারাও সোমাদেবী ও তাঁর পরিচিতদের বিরুদ্ধে হুমকি এবং মারধরের পাল্টা অভিযোগ করেছেন। দু’পক্ষের অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:১৭
আদর: মৃত কুকুরের ছানাদের দেখভালে সোমা। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

আদর: মৃত কুকুরের ছানাদের দেখভালে সোমা। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

একটি মা কুকুরকে পিটিয়ে মারার প্রতিবাদ করায় তাঁকেও বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যারাকপুরের পানপাড়ার বাসিন্দা এক মহিলা। টিটাগড় থানায় দায়ের করা অভিযোগে সোমা গঙ্গোপাধ্যায় নামে ওই মহিলা দাবি করেছেন, মঙ্গলবার রাতে কার্যত পুলিশের সামনেই তাঁকে পেটানো হয়। তা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। সোমাদেবীর দাবি, এলাকার কাউন্সিলর লোকজন জুটিয়ে নিয়ে এসে পুলিশের সামনেই তাঁকে মারধর করেন। বুধবার রাত পর্যন্ত অবশ্য এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ওই এলাকার বাসিন্দারাও সোমাদেবী ও তাঁর পরিচিতদের বিরুদ্ধে হুমকি এবং মারধরের পাল্টা অভিযোগ করেছেন। দু’পক্ষের অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে কথা বলতে ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান আগামী রবিবার ওই এলাকায় নাগরিক সভা ডেকেছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এলাকার কাউন্সিলর, সিপিএমের সুশান্ত ঘোষ। এলাকার বাসিন্দাদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন তিনি। সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘ওই কুকুরটা তো পাগল হয়ে গিয়েছিল। তাই ওকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে হয়েছে।’’ তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে পথে নেমেছেন পশুপ্রেমীরা। সোমাদেবী এ বার আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সোমাদেবীর অভিযোগ, শুক্রবার দুপুরে এলাকার কয়েক জন যুবক রাস্তায় একটি মা কুকুরকে বাঁশপেটা করে মেরে ফেলেন। কুকুরটি গত দু’বছর ধরে ওই এলাকাতেই ছিল।

দৃশ্যটির ছবি তুলে সোমাদেবী হাজির হন টিটাগড় থানায়। তাঁর দাবি, পুলিশ প্রথমে অভিযোগ নিতেই চায়নি। পরে পুলিশের উপর মহলে জানাজানি হলে অভিযোগ নেওয়া হয়।
সোমবার কুকুরটির দেহের ময়না-তদন্ত হয়। সোশ্যাল মিডিয়া তো বটেই, রাস্তায় নেমেও শুরু হয় প্রতিবাদ।

সোমাদেবীর অভিযোগ, তিনি যে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন, তা জানার পরেই অভিযুক্তেরা তাঁকে হুমকি দিতে শুরু করেন। পাড়ার বাসিন্দারাও অভিযুক্তদের পাশে দাঁড়ান। সোমাদেবী বলেন, ‘‘আমি ছেলেকে নিয়ে একা থাকি। দিনরাত খুনের হুমকি পেয়ে ভয় পেয়ে যাই।’’

আরও পড়ুন: ক্যানসারে বেড মেলেনি, হাসপাতাল চত্বরেই সারেজান

ফের গোলমাল শুরু হয় মঙ্গলবার রাতে। এলাকার বেশ কিছু পশুপ্রেমী সোমাদেবীর বাড়িতে যান। সোমাদেবীর অভিযোগ, ‘‘রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ আচমকা পাড়ার প্রচুর লোকজন আমার বাড়িতে চড়াও হয়। তারা জানতে চায়, আমার বাড়িতে এত লোক কেন? আমরা বেরিয়ে কথা বলতে গেলে ওরা আমাদের উপরে চড়াও হয়। বাইরে এত লোক দেখে বারবার পুলিশকে ফোন করি। পুলিশ এসে সবাইকে বার করে নিয়ে যায়।’’

সোমাদেবীর অভিযোগ, ‘‘পুলিশ যখন ফিরে যাচ্ছিল, তখন ওরা আমাকে টেনে বার করে রাস্তায় ফেলে কিল-চড়-লাথি-ঘুষি চালাতে থাকে। আমার ছেলে আনন্দ বাঁচাতে এলে তাকেও মারধর করে ওরা। আমার চিৎকার শুনে পুলিশ এবং আমার পরিচিতেরা ফিরে আসে। ওরা এলেও মার বন্ধ হয়নি।’’ পরে পুলিশ কোনও রকমে ভিড় হটায়। সোমাদেবীকে ভর্তি করা হয়েছিল ব্যারাকপুরের বি এন বসু হাসপাতালে। সেখানে বন্ডে সই করে রাত দুটো নাগাদ তিনি হাসপাতাল থেকে টিটাগড় থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।

সোমাদেবীর অভিযোগ, পুরো ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সুশান্তবাবু। সুশান্তবাবুর বক্তব্য, ‘‘বাইরে থেকে লোকজন এনে ওই মহিলা পাড়ার লোকেদের মারধর করিয়েছিলেন। আমিই তো পুলিশ ডাকি। আমি কেন মারতে যাব?’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই মহিলাই গোলমাল পাকাচ্ছেন।’’ কিন্তু কী ভাবে? সুশান্তবাবুর যুক্তি, ‘‘কুকুরটা বেশ কয়েক জনকে কামড়েছিল।’’ তার জন্য কি তাকে পিটিয়ে মারা যায়? সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘ওই মহিলা তো কুকুরটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে পারতেন!’’

Dog Woman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy