থিমের সঙ্গে লড়াই করেই প্রতি বছর ওঁরা টিকিয়ে রাখেন নিজেদের ঐতিহ্য। আলোর ভেল্কিতে শিল্পীরা ফুটিয়ে তোলেন সাম্প্রতিক ঘটনাবলী। কিন্তু করোনা আবহের পুজোয় শহর কি এ বার ভাসবে চন্দননগরের আলোকসজ্জায়?
করোনাজয়ীর হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিচ্ছেন এক ব্যক্তি—এলইডি-র কারিকুরিতে দৃশ্যকে কতটা জীবন্ত করা যায়, তা-ই দেখছিলেন প্রৌঢ় আলোকশিল্পী বাবু পাল। প্রশ্ন শুনে কাজ থামিয়ে বললেন, ‘‘শ্রীভূমি ও মুর্শিদাবাদের একটা কাজ পেয়েছি। ওদের জন্য করোনা-আলো তৈরি করছি ঠিকই, কিন্তু করোনার কারণেই চন্দননগরের প্রায় ৮০ শতাংশ শিল্পী এখনও কাজ পাননি।’’ আর সেই কারণেই এ বছর শহর ও শহরতলির রাস্তাঘাট একদা ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগরের আলোয় কতটা ঝলমল করবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন ওই আলোকশিল্পীরা। তাঁদের সংশয় যে অমূলক নয়, তা মানছেন পুজোর উদ্যোক্তারাও।
তাঁদের অনেকেরই মতে, চন্দননগরের আলোর ব্যবহার হল একটা পরম্পরা বা ঐতিহ্য। কিন্তু করোনাকালে মণ্ডপে নানা রকম বিধিনিষেধ মানতে গিয়ে উদ্যোক্তাদের অনেকেই সেই পরম্পরায় এ বার দাঁড়ি টেনেছেন। একডালিয়া এভারগ্রিনের কর্মকর্তা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘মণ্ডপের আলো একই রকমের থাকবে। রাজস্থানের জয়পুর থেকে এ বারও ঝাড়লন্ঠন আসবে। কিন্তু রাস্তায় অনেক গেট বা আলোকসজ্জা ততটা হবে না। কারণ, জনসমাগম কতটা হবে, সেটা যেমন প্রশ্ন, তেমনই বেশি আলো দিলে তা দেখতে ধাক্কাধাক্কিও হবে। করোনার সময়ে সেটা ঠিক নয়।’’ করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে আলোর রোশনাই কমানোর উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু।