অসহায়: পুড়ে গিয়েছে ঘর, কোনওরকমে সন্তানকে নিয়ে বেরিয়ে এসেছেন পরিবারের সদস্যেরা। ইনসেটে, ঘর থেকে বেরিয়ে আসছেন মানুষ। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
রেললাইনের ধারে দাঁড়িয়ে হাউ হাউ করে কাঁদছিলেন গীতা মণ্ডল। জানালেন, হাতাখুন্তি দিয়ে পোড়া ঘরটা ঘেঁটে দেখেছেন। আস্ত কোনও জিনিসই উদ্ধার করতে পারেননি। সোনার চেন ছিল, নগদ কিছু টাকা ছিল, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ সব কিছুই পুড়ে খাক। চোখের জল মুছতে মুছতে গীতা বলেন, ‘‘গত চৈত্র মাসেই ৪০ হাজার টাকা খরচ করে ঘরটা সারাই করেছিলাম। এখন মাথা গোঁজার কোনও জায়গাই রইল না।’’
বুধবার বিকেলে হাবড়ায় আগুনে পুড়েছে গীতার এক চিলতে ঘরটুকু। পরনের ছেঁড়া কাপড়টুকু ছাড়া আপাতত সহায়সম্বল কিছুই নেই পরিবারটির কাছে।
একই অবস্থা কৃষ্ণা সমাদ্দারের। গৃহ সহায়িকার কাজ করে অনেক কষ্টে কিছু টাকা জমিয়েছিলেন। জানালেন, হাজার পঞ্চাশ টাকা ছিল ঘরে। সে সব পুড়ে ছাই। ঘটনার সময়ে তিনি বাড়ি ছিলেন না। খবর পেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে দেখেন, ততক্ষণে সব শেষ।
যাঁরা কাছে ছিলেন, তাঁরাও যে ঘরের মালপত্র কিছু বাঁচাতে পেরেছেন, এমনটা নয়। সকলেই জানালেন, এত দ্রুত আগুন ছড়িয়েছে, সামান্য জিনিসটুকুও হাতে করে বের করে আনতে পারেননি কেউ। কোনও রকমে প্রাণটুকু নিয়ে বেরোতে পেরেছেন।
উষা সরকার জানালেন, প্রায় দেড় লক্ষ টাকার গয়না ছিল। ঘরপোড়া ছাই সরিয়ে সরিয়ে খোঁজার চেষ্টা করছিলেন সে সব। মাঝে মাঝে শাড়ির আঁচলে চোখ মুছে নিচ্ছিলেন। খানিকক্ষণের চেষ্টায় কিছুই উদ্ধার করতে না পেরে রেললাইনের উপরে হতাশ হয়ে বসে পড়লেন। আশপাশের কয়েকজন মহিলা গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন বটে। তবে তাঁদের নিজেদেরও চোখের জল বাঁধ মানছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy