ঝুঁকি: জেটির উপরে বেঞ্চ রেখে চলছে ওঠানামা। ছবি: অরুণ লোধ
যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে দশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সংস্কার হয়েছে বজবজ ফেরিঘাটের জেটি। জেটি ঝাঁ-চকচকে হলেও যাত্রীদের নিরাপত্তা এখনও দূরঅস্ত্ বলছেন যাত্রীরাই।
প্রতি দিন অসংখ্য যাত্রী এই ফেরিঘাট দিয়ে বজবজ-হাওড়ার বাউড়িয়ার মধ্যে যাতায়াত করেন। দেখা গেল, লঞ্চ আসতেই যাত্রীরা নামার আগে প্রতীক্ষিত যাত্রীরা হুড়মুড়িয়ে তাতে ওঠার চেষ্টা করছেন। ওঠা-নামাকে কেন্দ্র করে ধাক্কাধাক্কি লেগেই হয় বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
যাত্রীদেরই একাংশ জানাচ্ছেন, এর কারণ, জেটির গেট সব সময়ে খোলা থাকে। ওই জেটিতে নতুন লঞ্চের পাশাপাশি পুরনো লঞ্চও চালানো হয়। সেগুলি জেটি থেকে অনেকটা উঁচু। ছোট কাঠের বেঞ্চে উঠে তবেই লঞ্চে উঠতে পারেন যাত্রীরা। যাত্রীদের আশঙ্কা, ওই বে়ঞ্চ পিছলে যে কোনও দিন বড় বিপদ ঘটতে পারে।
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, দফতরের নিয়ম, অনুযায়ী নতুন জেটিগুলিতে ওঠার আগে যে গেট থাকে, সেখানেই আটকে দেওয়া হয় যাত্রীদের। লঞ্চে হুড়মুড়িয়ে যাত্রীদের ওঠা বন্ধ করতেই এই নিয়ম। যাত্রীরা নামার পরেই ওই গেট খুলে দেওয়ার কথা। কিন্তু বজবজের ওই জেটিতে গেটটি সব সময়ে খোলা থাকে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি এর জন্যে লঞ্চে উঠতে গিয়ে পড়ে যান এক বৃদ্ধা।
কয়েক মাস আগে পরিবহণ দফতর রাজ্যের ৬৮টি জেটি সংস্কারে উদ্যোগী হয়। প্রতিটি জেটি পিছু দশ লক্ষ টাকা করে মোট ৬ কোটি ১০ লক্ষ টাকা ব্যয় করেন দফতর। বজবজের জেটিটিও সংস্কার হয় তখনই।
পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, জেটি সংস্কারের সময়ে লিখিত নির্দেশিকা ছিল, যাত্রীদের সুরক্ষার কথা ভেবে জেটির গেট বন্ধ রাখতে হবে। তা মানা না হলে কড়া পদক্ষেপ করবে দফতর।’’ জেটিতে কাঠের বেঞ্চ ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি জানান, বজবজের ফেরিঘাটের দায়িত্বে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমিতি সমবায়। ওই দফতর থেকে নতুন লঞ্চ দেওয়া হয়েছে। তা হলে কেন পুরনো লঞ্চে যাত্রী তুলতে হচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘সমিতির কর্তাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।’’
হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির সম্পাদক অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গেট বন্ধ রাখলে যাত্রীরা ঠেলে বেরিয়ে যান। তাঁদের আটকাতে গিয়ে আমাদের কর্মীরাই নিগৃহীত হয়েছেন।’’ কাঠের বেঞ্চ ব্যবহার প্রসঙ্গে তাঁর সাফাই, ‘‘জোয়ার-ভাঁটায় জল ওঠা-নামা করে। তাই কাঠের বেঞ্চ রাখতে হয়।’’ যদিও এই যুক্তি মানতে চাননি পরিবহণ দফতরের এক কর্তা। তাঁর দাবি, নতুন লঞ্চের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy