Advertisement
E-Paper

অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে কেন্দ্রের রিপোর্টে ক্ষোভ

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক দেশ জুড়ে যে সমীক্ষা করেছে, তাতে অপরিচ্ছনতার তালিকায় সব থেকে উপরের কয়েকটি পুরসভার তালিকায় নাম রয়েছে উত্তর-ব্যারাকপুরের।  এমন মূল্যায়নে অবশ্য কিছুটা বিস্মিতই পুর এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, কয়েকটি জায়গা ছাড়া রাস্তাঘাট নিয়মিত পরিষ্কার হয়। নিকাশি নালাও সাফসুতরো। তবে বড় রাস্তার পাশে কয়েকটি জায়গায় যে ভাবে জঞ্জাল পড়ে থাকে তা দৃষ্টিকটু তো বটেই, স্বাস্থ্যহানিকর এবং লজ্জাজনকও।

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০৮:২০
জঞ্জাল: পলতায় দমকল কেন্দ্রের সামনে।  ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

জঞ্জাল: পলতায় দমকল কেন্দ্রের সামনে।  ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

টিপটিপ বৃষ্টির বিরাম নেই। প্রায় সুনসান দুপুরে জনহীন ঘোষপাড়া রোড। পলতা দমকল কেন্দ্রের সামনের রাস্তা দিয়ে একটার পর একটা গাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে। রাস্তার একধারে দু’টো গরু জাবর কেটে যাচ্ছে অবিরাম। সামনের আস্তাকুঁড়ে ডাঁই করা জঞ্জাল। তার দু’পাশে দাঁড় করানো দু’টি জঞ্জালবাহী গাড়ি। সেই গাড়ির গায়ে লেখা ‘উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভা।’

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক দেশ জুড়ে যে সমীক্ষা করেছে, তাতে অপরিচ্ছনতার তালিকায় সব থেকে উপরের কয়েকটি পুরসভার তালিকায় নাম রয়েছে উত্তর-ব্যারাকপুরের। এমন মূল্যায়নে অবশ্য কিছুটা বিস্মিতই পুর এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, কয়েকটি জায়গা ছাড়া রাস্তাঘাট নিয়মিত পরিষ্কার হয়। নিকাশি নালাও সাফসুতরো। তবে বড় রাস্তার পাশে কয়েকটি জায়গায় যে ভাবে জঞ্জাল পড়ে থাকে তা দৃষ্টিকটু তো বটেই, স্বাস্থ্যহানিকর এবং লজ্জাজনকও।

তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এমন মূল্যায়নে বেজায় চটেছেন উত্তর-ব্যারাকপুরের পুরপ্রধান মলয় ঘো‌ষ। তিনি বলেন, ‘‘কারা কখন সমীক্ষা করল, কিছুই জানি না। সমীক্ষার মাপকাঠিই বা কী, তা-ও জানতে পারিনি।’’ তাঁর দাবি, মাপকাঠি যা-ই হোক না কেন, এই পুরসভা কোনও ভাবে ‘অপরিচ্ছন্ন শহর’-এর তালিকায় আসতে পারে না।

মেয়রের পাল্টা তোপ, ‘‘আমার পুর এলাকার বেশিরভাগই তো কেন্দ্রীয় সংস্থার দখলে রয়েছে। সেই এলাকার দায় কে নেবে। আমরা যদিও নিয়মিত তা পরিষ্কার করি। কিন্তু এরা আমাদের প্রাপ্য কোটি কোটি টাকা দেয় না।’’ তিনি জানান, এই সমীক্ষা এবং মূল্যায়ন নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকে চি‌ঠি পাঠাবেন।

পলতার বাদামতলা, নবাবগঞ্জ, স্টোরবাজার এবং গঙ্গা-লাগোয়া ব্যারাকপুরের কিছু এলাকা সাফসুতরো থাকলেও শহরের সব থেকে ব্যস্ত ঘোষপাড়া রোডের দু’দিকে যে ভাবে জঞ্জাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, তা কোনও আধুনিক শহরের স্বচ্ছতার বিজ্ঞাপন হতে পারে না বলেই মনে করেন এলাকার বাসিন্দারা।

বাদামতলায় দমকল কেন্দ্রের সামনে ভ্যাটটি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এলাকার এক দোকানদার জানালেন, জঞ্জাল সাফাইয়ের দু’টি গাড়ি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকে। অথচ তার পাশেই জমছে জঞ্জাল। পচা জঞ্জালের দুর্গন্ধে টেঁকা দায় হয়ে পড়ে তাঁদের।

এই ভ্যাটটি ছাড়াও রাস্তার দু’পাশে যেখানে সেখানে জমিয়ে রাখা হচ্ছে জঞ্জাল। সেগুলি মাঝে মধ্যে পরিষ্কার হয় বলে জানালেন এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু তাঁদের প্রশ্ন, গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা কেন নিয়মিত পরিষ্কার হবে না? অনেকেই জানালেন, বর্ষা বলে অনেক ময়লা ধুয়ে যাচ্ছে, তা না হলে অবস্থাটা আরও খারাপ ছিল। দমকল কেন্দ্র থেকে ব্যারাকপুরের দিকে কিছুটা এগিয়ে গেলে রাস্তার ধারে পড়ে একটি বড় পুকুর। সেটি সাফাই না হওয়ায় সেখানেও জঞ্জাল জমছে। তাতে পুকুরের একটি পাড় প্রায় বুজে গিয়েছে। সেখানে মশাদের ঘরকন্না। পুকুরটি আগে ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করতেন স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। তাঁর দাবি, তখন পুকুর পরিষ্কার থাকত। এ বার আর তাঁকে তা ইজারা দেয়নি স্থানীয় কমিটি। শহরের প্রায় সব এলাকাতেই বেশ কিছু পরিত্যক্ত বাড়ি রয়েছে। সেগুলিকে স্থানীয় বাসিন্দারা ভ্যাট হিসেবে ব্যবহার করছেন। একই অবস্থা গঙ্গার ঘাটগুলিরও। তবে বর্ষা বলে সেখানে জঞ্জাল তেমন চোখে পড়ছে না।

Uncleanliness Barrackpore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy