E-Paper

প্রত্যাঘাত স্বাগত, বলছেন প্রাক্তনীরা

বনগাঁ মহকুমার গোপালনগরের চারমাইল এলাকায় থাকেন গোবিন্দ। ১৯৬৪ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৫ ০৮:৩২
প্রত্যাঘাতের খবরে উচ্ছ্বসিত মানুষ। বিজেপির তরফে হাবড়া স্টেশনের কাছে জাতীয় পতাকা নিয়ে উৎসব করতে দেখা যায়।

প্রত্যাঘাতের খবরে উচ্ছ্বসিত মানুষ। বিজেপির তরফে হাবড়া স্টেশনের কাছে জাতীয় পতাকা নিয়ে উৎসব করতে দেখা যায়। মহিলারা সিঁদুর খেলেন। লাড্ডু বিতরণ হয়। জাতীয় পতাকা নিয়ে মিছিল বেরোয়। মিষ্টি বিলি হয় বনগাঁর শক্তিগড়েও। ছবি: সুজিত দুয়ারি

পহেলগামে জঙ্গি হামলা এবং পাকিস্তানিদের কথাবার্তা শুনে কয়েক দিন ধরেই গায়ের রক্ত যেন ফুটছিল আশিঊর্ধ্ব প্রাক্তন সৈনিক গোবিন্দ ঘোষের। মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানে জঙ্গি ঘাঁটিগুলি ভারত ক্ষেপনাস্ত্র দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার পরে এখন অনেকটা শান্ত তিনি। বললেন, ‘‘ভারত খুব ভাল পদক্ষেপ করেছে। তিন বাহিনীকেই অসংখ্য ধন্যবাদ।’’

বনগাঁ মহকুমার গোপালনগরের চারমাইল এলাকায় থাকেন গোবিন্দ। ১৯৬৪ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। এক বছর প্রশিক্ষণ শেষে ১৯৬৫ সালে সেনাবাহিনীর পদাতিক বাহিনীতে যুক্ত হন। ওই বছরই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে যোগ দিতে জম্বু-কাশ্মীরে পাঠানো হয় তাঁকে।

স্মৃতি হাতড়ে গোবিন্দ বলছিলেন, ‘‘পাকিস্তানি সেনারা ছিল পাহাড়ের উপরে। আমরা ছিলাম নীচে। আমরা তখন থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল ব্যবহার করতাম। সংঘর্ষে আমাদের ১৪ জন সৈনিক মারা গিয়েছিলেন। আমি ছিলাম সুন্দরবনী পাহাড় এলাকায়।’’

১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময়ে গোবিন্দ ছিলেন লে সীমান্তের কাছে ভারত-চিন সীমান্তে পাহারার দায়িত্বে। ১৯৭৯ সালে তিনি অবসরগ্রহণ করেন।

গাইঘাটার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মনোরঞ্জন মণ্ডলে বয়স ৭৮। ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৬৯ সালে ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যুক্ত হন। তখনও তাঁর ১৮ বছর হতে কিছু দিন বাকি। অভিভাবক এবং দু’জন গেজেটেড অফিসারের নো-অবজেকশন শংসাপত্র দেখিয়ে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন।

১৯৭১ সালের যুদ্ধে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে। তিনি বলেন, ‘‘পাইলট, টেকনিশিয়ান, তাঁদের পরিবারের সদস্য এবং ইউনিটের সকলকে যাবতীয় সাহায্য করার দায়িত্ব ছিল আমার উপরে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পাকিস্তান পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে সরাসরি বোমা না মারলেও আশপাশের এলাকায় বোমা ফেলেছিল। কিন্তু পাকিস্তানের বোমাগুলি ছিল পুরনো। ফলে বেশিরভাগই ফাটেনি। ফাটলে আমাদের বড়সড় ক্ষতি হয়ে যেত। বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজেও আমি সাহায্য করতাম অফিসারদের। কোথাও বোমা দেখলে দ্রুত খবর পৌঁছে দিতাম।’’

বুধবার সকাল থেকেই মোবাইলে পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতের হামলার খবর দেখছেন টিভিতে। বললেন, ‘‘পহেলগামে আচমকা উগ্রবাদীরা হামলা চালিয়েছিল, যা আমরা ভাবতেও পারিনি। তবে সেনাবাহিনী যে ভাবে পরিকল্পনা করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পাল্টা আঘাত হেনেছে, তাতে আমি খুশি।’’

২০০৮ সালে তিনি বাহিনী থেকে অবসর নিয়েছেন। মনোরঞ্জনের কথায়, ‘‘জঙ্গি হানার স্থায়ী সমাধান করতে হলে ভারত-পাকিস্তান দীর্ঘ সীমান্তে আরও ১ লক্ষ সৈনিক নিয়োগ করতে হবে। তা হলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pahalgam Terror Attack Bangaon

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy