উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের নতুন সভাধিপতি হলেন রেহেনা খাতুন।
বুধবার বারাসতে জেলা পরিষদ ভবনে তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বিধানসভা শাসকদলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ, অশোকনগরের বিধায়ক ধীমান রায়।
রহিমা মণ্ডলের জায়গায় এলেন রেহেনা। বিধানসভা ভোটে দেগঙ্গা থেকে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে জয়ী হয়েছেন রহিমা। পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, বিধায়ক ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি— দুই পদে এক সঙ্গে থাকা যায় না। দিন কয়েক আগে রহিমা সভাধিপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদটি ওবিসি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। সে জায়গাতেই এলেন রেহেনা।
অশোকনগরের তরুলিয়া গ্রামে বাড়ি তাঁর। বছর চুয়াল্লিশের রেহেনা ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। গত পঞ্চায়েত ভোটে প্রথমবারের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। হাবরা ২ ব্লক এলাকায় জেলা পরিষদের ২০ নম্বর আসন থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে জয়ীও হন।
রেহেনার শ্বশুর আব্দুল রউফ অতীতে জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা ছিলেন। তা ছাড়া, পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিতেও নানা সময়ে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করেছিলেন। গত পঞ্চায়েত ভোটে রউফের আসনটি ওবিসি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যায়। ওই আসনেই দাঁড়ান তাঁর বৌমা।
তাঁর বাপের বাড়ি স্থানীয় দিঘরা- মালিকবেড়িয়া এলাকায়। সে বাড়িতেও রাজনীতির চল আছে। দাদা আবুল কাশেম মণ্ডল ওই পঞ্চায়েতের সদস্য। রাজনীতির আবহেই বেড়ে ওঠা রেহেনার। পেশায় স্কুল শিক্ষক রেহেনা স্থানীয় নজরুল বালিকা বিদ্যালয়ের বায়োলজির শিক্ষিকা। বিএসসি পাশ করার পরে বিএড-ও করেছেন। ছাত্রী পড়াতে বেশ লাগে বলে জানালেন। কিন্তু আপাতত সভাধিপতি হওয়ার কারণে ছাত্রী পড়ানো থেকে ইস্তফা দিতেই হচ্ছে।
কেন রেহেনাকে এই গুরুদায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে? দলীয় সূত্রের খবর, সভাধিপতি হওয়ার দৌড়ে আরও কয়েকজনের নাম ছিল। কিন্তু সকলকে টেক্কা দিয়েছেন রেহেনা। এ ক্ষেত্রে জেলা পরিষদে তাঁর শ্বশুরের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তাঁর পক্ষে গিয়েছে। দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয়বাবুর ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত রেহেনা। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘জেলা পরিষদে দলের অন্য সদস্যেরা সকলে চেয়েছেন বলেই রেহেনাকে সভাধিপতি করা হয়েছে।’’ বর্তমানে জেলা পরিষদে মোট সদস্য ৫৬ জন। তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা ৩৬।
কী হবে নতুন সভাধিপতির লক্ষ্য? রেহেনার কথায়, ‘‘আমাদের জেলায় একশো দিনের কাজের প্রকল্প খুব ভাল হচ্ছে। ওই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি খাদ্যসাথী, সবুজসাথী, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পগুলিও জারি রাখতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী নতুন যে প্রকল্প ঘোষণা করবেন, সেগুলিও সঠিক ভাবে রূপায়ণের মাধ্যমে জেলার সার্বিক উন্নয়ন করাটাই আমার লক্ষ্য হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy