Advertisement
E-Paper

শ্বশুরবাড়ি থেকে সোজা থানায় রিতা

বছর ষোলোর রিতা দাসের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে তার মা রেখা দাস, দূর সম্পর্কের মাসি শিখা দাস, পাত্রের মা বাসন্তী দাসকে। পুলিশ জানায়, মেয়েটিকে বুধবার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে দেওয়া হয়। সেখান থেকে সল্টলেকের একটি হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ০৭:৩০

বিয়ের আসরে গিয়ে নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করেছেন আগে। কিন্তু বিয়ের দিন কুড়ির মাথায় শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে আসা নাবালিকার কথা শুনে থ গাইঘাটা থানার পুলিশ কর্মীরা। মঙ্গলবার নিজেই থানায় এসে মেয়েটি জানিয়েছে, বয়স এখনও আঠারো পেরোয়নি তার। পড়তে চেয়েছিল। কিন্তু মা-মাসিরা জোর করে বিয়ে দিয়েছে।

বছর ষোলোর রিতা দাসের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে তার মা রেখা দাস, দূর সম্পর্কের মাসি শিখা দাস, পাত্রের মা বাসন্তী দাসকে। পুলিশ জানায়, মেয়েটিকে বুধবার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে দেওয়া হয়। সেখান থেকে সল্টলেকের একটি হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ থানায় আসে রিতা। ডিউটি অফিসারের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। এগিয়ে যান ওসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। তখনই রিতা বলে তার জীবনের কাহিনি। জানায়, বাংলাদেশ থেকে কয়েক বছর আগে সে এসেছে। বাবা এখনও ও দেশেই থাকেন। মায়ের সঙ্গে গাইঘাটার গুটরি কয়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। পাশেই তার দূর সম্পর্কের মাসি শিখার বাড়ি। ওই মহিলাই একদিন ‘সুপাত্রের’ খোঁজ আনে। বনগাঁর বেদেপোঁতার বাসিন্দা গৌতম দাস। মায়ের কাছে কেঁদে পড়ে মেয়েটি। বলে, সে পড়তে চায়। রিতার কথায়, ‘‘বাংলাদেশে স্কুলে পড়তাম। এখানে এসে কাগজপত্র না থাকায় স্কুলে এখনও ভর্তি হইনি। চেষ্টা করছিলাম।’’

কিন্ত কোথায় কী! বিয়ের খবর শুনে মেয়ের মাথায় বাজ পড়ে। রিতা জানায়, সে বলেছিল, আঠারো বছরের আগে বিয়ে করতে চায় না সে।। কিন্তু মা-মাসিরা ওজর-আপত্তি শুনতে রাজি ছিলেন না। তাকে মারধরও করা হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন যখন শোনে সে কথা, তারাও নাকি পরে মারধর করে মেয়েটিকে।

পুলিশ জানায়, কথা বলতে বলতে বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছিল মেয়েটি। শ্বশুরবাড়ি থেকে কোনও মতে পালিয়ে এসেছে বলে জানায়। ভীত-সন্ত্রস্ত ছিল।

পুলিশ অবশ্য ওই দিনই গ্রেফতার করে তিনজনকে। গৌতমেরও খোঁজ চলছে বলে থানা সূত্রের খবর। ধৃতদের বিরুদ্ধে ‘প্রোটেকশন অব চাউল্ড ম্যারেজ অ্যাক্ট, ২০০৬’ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

রিতা বলে, ‘‘কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে হলে কত সমমস্যা হয়। আমার মা-মাসিদের সে কথা বলায় ওরা পাত্তাই দিল না। একটা সার কথা বছেছিলাম, বাঁচতে গেলে পালাতে হবে।’’ মেয়েটির কথায়, ‘‘আমি যেখান থেকে হোক, পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।’’

Marriage Minor Marriage Police রিতা দাস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy