Advertisement
০৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Bangladeshi

বাংলাদেশ থেকে এসে বাড়ি ভাড়া নিয়ে পর পর চুরি পুজোর সময়, বারাসতে ধরা পড়ল ওপারের মিজানুর

পুলিশ জানিয়েছে, সোনা চুরি করার পর তার পরিমাণ দেখার জন্য ভাড়ার বাড়িতে সোনা মাপার যন্ত্রও রেখেছিল মিজানুর। এখন প্রশ্ন, মিজানুর বাংলাদেশ থেকে এসে এই ভাবে একাই চুরি করছে?

Arrest

পুলিশের হাতে পাকড়াও ‘বাংলাদেশি চোর’ মিজানুর। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বারাসত শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৬
Share: Save:

পরিবারের কে কখন বাড়িতে ঢোকেন, কে কখন বেরোন, কয়েক দিন ধরে সে সবের উপর নজর রাখা হয়েছে। দুর্গাপুজোর সময় বাড়ির লোকজন বেরোতেই চুরি হয় উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের একটি বাড়িতে। ওই চুরির ঘটনার প্রায় এক মাস পরে ধরা পড়ল চোর। তবে চোরের নামধাম জানার পর অবাক হয়েছে পুলিশও। কারণ, বারাসতে চুরির ঘটনায় ধৃতের বাড়ি বাংলাদেশে। সিসিটিভি দেখে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে মিজানুর তালুকদার নামে বাংলাদেশের বাসিন্দা ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে পাকড়াও করে বারাসতের ওই বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে মিজানুর নিজেই জানিয়ে দিয়েছে, কোথা দিয়ে ঢুকে কী ভাবে প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে চুরি করে সে।

গত ১১ অক্টোবর বারাসত থানা এলাকার বাসিন্দা প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে চুরি হয়। প্রবীরের মেয়ের বিয়ে ছিল। তাই বাড়িতে নগদ কিছু টাকা এবং গয়না রাখা ছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বাংলাদেশি চোরের কাছ থেকে সোনা এবং নগদ টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে। কী ভাবে বাংলাদেশের এক বাসিন্দা উত্তর ২৪ পরগনায় এসে চুরি করতে পারল? পুলিশ জানাচ্ছে, পুজোর আগে এ দেশে ঢুকেছিল মিজানুর। বারাসাত হাসপাতালের কাছে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করেছিল সে। ফ্ল্যাট থেকে দিনের বেলায় বেরিয়ে বাড়ি-বাড়ি চুরি করত সে। এ ভাবেই বারাসাত থানা এলাকার একাধিক বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। কারও বাড়ির পাঁচিল টপকে ঘরে ঢুকেছে। কারও বাড়ির দরজার গ্রিল ভেঙে চুরু করেছে বাংলাদেশের মিজানুর। তদন্তে এ-ও জানা গিয়েছে, চুরির সময় এমন ভাব করত অভিযুক্ত যে প্রতিবেশীরা ভাবতেন ওই বাড়িতে হয়তো কোনও কাজ হচ্ছে। এমনই বেশ কয়েকটি বাড়ির কর্তা চুরির অভিযোগ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বারাসতের বাসিন্দা প্রবীর বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে প্রায় ৩২ হাজার টাকা নগদ ছিল। মেয়ের বিয়ের জন্য কিছু গয়না ছিল বাড়িতে। সেগুলো ফেরত পেয়েছি। তা ছাড়া একটা মঙ্গলসূত্র ছিল। সেটা ১৯৮২ সালের। তার একটা সেন্টিমেন্টাল ভ্যালু ছিল। ওটা পাইনি।’’ তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাঁরা জানতে পারেন গত ১১ অক্টোবর সপরিবারে বাড়ি থেকে বেরনোর পরেই একটি গাড়ি এসে থেমেছিল তাঁদের জায়গায়। তার পর চুরি।

বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বুঝতে পারে ‘চোর’ আসলে এক জনই। নানা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করার পর অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে তারা। পুলিশ জানিয়েছে, সোনা চুরি করার পর তার পরিমাণ দেখার জন্য ভাড়ার বাড়িতে সোনা মাপার যন্ত্রও রেখেছিল মিজানুর। এখন প্রশ্ন, মিজানুর বাংলাদেশ থেকে এসে এই ভাবে একাই চুরি করছে না কি তার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে? মিজানুরের স্ত্রীকেও সন্দেহ করা হচ্ছে। সোমবার বারাসত থানা থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া। তিনি জানান, চুরির কাজে অভিযুক্তকে কেউ সাহায্য করত কি না বা তার সঙ্গে আর কেউ এ রকম ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে কি না, সে সব খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি তিনি এলাকাবাসীকে সাবধান করেছেন বাড়ি ভাড়া দেওয়ার সময় যেন ভাড়াটে সম্পর্কে ভাল করে খোঁজখবর করে নেওয়া হয়। এ বিষয়ে তিনি পরে পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলাদা করে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladeshi arrest Barasat Crime News
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy