Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

শিশুখাদ্যে টান পড়ছে ত্রাণ শিবিরে 

দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ত্রাণ শিবিরগুলিতে পশুখাদ্য দেওয়া নিয়ে আমাদের কাছে কোনও নির্দেশিকা নেই। এ বিষয়ে টাকাও ধার্য হয়নি। সরকারি নির্দেশ পেলে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে পশুখাদ্যের ব্যবস্থা করা হবে।’’

গ্রামে গ্রামে পাঠানো হচ্ছে ত্রাণ। নিজস্ব চিত্র

গ্রামে গ্রামে পাঠানো হচ্ছে ত্রাণ। নিজস্ব চিত্র

সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০১:১৮
Share: Save:

পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছচ্ছে না, পানীয় জল নেই বলে অভিযোগ উঠছে সুন্দরবনের নানা প্রান্ত থেকে। বহু জায়গায় ত্রাণ নিয়ে দলবাজিরও অভিযোগ উঠেছে। তারই মধ্যে সমস্যা হচ্ছে শিশুদের খাবার নিয়ে। সে দিকে অবশ্য বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

বুলবুলের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত সুন্দরবনের অধিকাংশ এলাকা। বিপর্যস্ত জনজীবন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, অধিকাংশ এলাকায় পর্যাপ্ত পানীয় জল, শিশুখাদ্য ও পশুখাদ্য-সহ পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা নেই। জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত জায়গায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি। বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন এলাকাতে বেবি ফুড পাঠানো হয়েছে। যাতে কোথাও মানুষের ত্রাণ পেতে সমস্যা না হয়, সে জন্য কর্মীরা নজরদারি চালাচ্ছেন। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পশুখাদ্যের ব্যাপারে কোনও নির্দেশ এখনও পাইনি। তা ছাড়া, কেউ কোনও অভিযোগও জানাননি।’’

গোসাবার কুমিরমারি গ্রামের মিনতি মণ্ডল বলেন, ‘‘ঝড়ে গাছ পড়ে বাড়িটাই ভেঙে গিয়েছে। যা পরিস্থিতি বাচ্চাদের নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। সব কিছু শেষ হয়ে গিয়েছে। ত্রাণ শিবির থেকে চাল দেওয়া হলেও ছোট বাচ্চার জন্য কোনও খাবার দেওয়া হয়নি। যা পরিস্থিতি কোথাও বাচ্চার দুধ পাচ্ছি না।’’

দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ত্রাণ শিবিরগুলিতে পশুখাদ্য দেওয়া নিয়ে আমাদের কাছে কোনও নির্দেশিকা নেই। এ বিষয়ে টাকাও ধার্য হয়নি। সরকারি নির্দেশ পেলে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে পশুখাদ্যের ব্যবস্থা করা হবে।’’

ঝড়ের তাণ্ডবের পরে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এলাকা পরিদর্শনে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় যান। কাকদ্বীপে তিনি সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি, ত্রাণ নিয়ে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী শিশুখাদ্য নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। তারপর থেকেই জেলা প্রশাসন অধিকাংশ ত্রাণ শিবিরে শিশুখাদ্য সরবরাহ করতে উদ্যোগী হয়।

তবে বিজেপির জেলা সভাপতি সুনীপ দাস জানান, এই ত্রাণ শুধু তৃণমূলের লোকজনই পাচ্ছে। ঝড়ে বহু মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। অনেকের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। পর্যাপ্ত খাবার নেই। অথচ তৃণমূল ত্রাণ নিয়ে দলবাজি করছে। তাঁর কথায়, ‘‘সামান্য ত্রিপল চাইতে গেলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তোরা বিজেপি করিস। তাই কিছু দেওয়া হবে না। বাধ্য হয়ে আমাদের দলের পক্ষ থেকে বেশ কিছু এলাকায় ত্রিপল পাঠানো হয়েছে।’’

অভিযোগ উড়িয়ে জেলার যুব তৃণমূলের সভাপতি তথা ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা বলেন, ‘‘বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ করছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত জায়গায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। প্রশাসন সর্বত্র নজরদারি করছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ওরা রাজনীতি করার জন্য এবং মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে এই সমস্ত মিথ্যা নাটক করছে। দলের পক্ষ থেকে সমস্ত পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোথাও যেন ত্রাণ নিয়ে দলবাজি করা না হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Food Scarcity of Food Bulbul Relief Camp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE