Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Daluakhaki Vandalism

পুড়ে ছাই গোটা তিরিশ সেলাইয়ের মেশিন

তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর খুনের পরে তাণ্ডব চলে দলুয়াখাকি গ্রামে। বাড়ি-দোকান ভেঙে, পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দলুয়াখাকির বহু মানুষ দর্জির পেশায় যুক্ত।

এই মেশিনে আর কাজ হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

এই মেশিনে আর কাজ হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। ছবি: সমীরণ দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জয়নগর শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:১৮
Share: Save:

ভাঙচুরের সময়ে সেলাই মেশিনগুলোর ক্ষতি না করার জন্য কাকুতি-মিনতি করেছিলেন বছর কুড়ির যুবক। কথা শোনেনি হামলাকারীরা। ভেঙে পুড়িয়ে দিয়েছিল সব মেশিন।

সোমবার দলুয়াখাকির সেই ঘটনার পরে আরও অনেকের সঙ্গে এলাকা ছাড়েন আলি হোসেন লস্কর। মঙ্গলবার রাতে ভাঙা ঘরে ফিরেছেন। বুধবার সকালে পুড়ে যাওয়া কারখানা থেকে উদ্ধার করেছেন বেশ কয়েকটি সেলাই মেশিন। তবে সেগুলি আর ব্যবহারের উপযোগী নেই।

তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর খুনের পরে তাণ্ডব চলে দলুয়াখাকি গ্রামে। বাড়ি-দোকান ভেঙে, পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দলুয়াখাকির বহু মানুষ দর্জির পেশায় যুক্ত। মেশিন কিনে গ্রামেই কাজ করেন। ছোটখাটো গোটা দু’য়েক কারখানাও রয়েছে গ্রামে। সে রকমই একটি কারখানা চালাতেন কামালউদ্দিন লস্কর। প্রায় পনেরোটা সেলাই মেশিন ছিল। কাকার কারখানায় কাজ করতেন ভাইপো আলি হোসেন। তাঁর কথায়, “ভাঙচুরের সময়ে কারখানাটাও বাদ দেয়নি। সব মেশিন ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়। অনেক অনুরোধ করেছিলাম, মেশিনগুলো ভেঙো না। সব ক’টাই পুড়ে-ভেঙে গিয়েছে। কয়েকটা পিছনের পুকুরে পড়েছিল। এ সব মেশিন আর চলবে বলেই মনে হয় না।”

আলি জানান, জনা পনেরো লোক কাজ করতেন কারখানায়। মূলত ডেনিম প্যান্ট সেলাই হত। সন্তোষপুর থেকে কাপড় এনে এখানে সেলাই করে সরবরাহ করা হত। এক এক জন দৈনিক ৫০০-৬০০ টাকা আয় করতেন। বর্তমানে কাজ হারিয়েছেন সকলেই। কয়েক লক্ষ টাকার মাল কারখানায় মজুত ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে সে সবও। আবার কবে কারখানা খুলবে, আদৌ খুলবে কি না— জানেন না কেউ।

আলির কথায়, “মাধ্যমিক পাস করে কারখানায় ঢুকে যাই। কাজ শিখে গিয়েছিলাম। ভালই আয় হত। জানি না এখন কী করব।”

গ্রামে আরও একটি বাড়িতে দর্জির কারখানা চলত। সেখানেও প্রায় পনেরোটি মেশিন ছিল। সে সবই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মর্জিনা লস্কর নামে মহিলা বলেন, “গ্রামের অনেকে কাজ করতেন। বাইরে থেকেও আসতেন কয়েক জন। হাতে চালানো মেশিনে সেলাইয়ের কাজ হত। জামা, কাপড়-সহ বিভিন্ন জিনিসের বরাত নিয়ে কাজ হত। সব শেষ। এতগুলো পরিবারের কী ভাবে চলবে জানি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

joynagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE