সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে উত্তর ২৪ পরগনার জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়ক লাগোয়া মদের দোকান ও অন শপগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার কিছু রাজ্য সড়ককে পুরসভার রাস্তা বলে ঘোষণা করায় মঙ্গলবার থেকে খুলে গেল বেশ কিছু মদের দোকান।
জেলা আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জেলায় বন্ধ হয়েছিল ১০৫টি মদের দোকান ও অন শপ। আবগারি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সরকারি নিয়মের মধ্যে থেকেই যত বেশি সম্ভব মদের দোকানগুলি খোলার চেষ্টা চলছে।’’
মদের দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়েছিলেন। রাজ্য সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। তা ছাড়া গোপনে চড়া দামে মদ বিক্রিও বেড়েছিল। বসিরহাটের টাকি রোডের পাশে মাটিয়া এলাকা-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় চড়া দামে দেশি বিদেশি মদ পাওয়া যাচ্ছিল। চোলাইয়ের বাজার দরও এক ধাক্কায় বেড়ে গিয়েছে। তবে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর অবশ্য বেশ কিছু মদের দোকানের মালিকের মুখে হাসি ফুটেছে।
বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন বারাসত, বনগাঁ, হাবরা ও ব্যারাকপুরের মদের দোকানের মালিকেরা। শুধু মালিকেরা নন, ওই দোকানগুলিতে যাঁরা কাজ করতেন তাঁরাও বেকার হয়ে গিয়েছিলেন। ওই সব এলাকায় বেশির ভাগ মদের দোকান বা বারগুলি জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের পাশেই ছিল।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর বারাসতের চারটি ও হাবরার সাতটি মদের দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলেও বন্ধ অধিকাংশ মদের দোকান। মাস কয়েক আগেই পূর্ত বিভাগ ঘোষপাড়া রোডকেও রাজ্য সড়ক হিসাবে চিহ্নিত করায় বিটি রোড ও কল্যাণী এবং বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের মতো ঘোষপাড়া রোডের ধারে থাকা মদের অফ শপ ও পানশালাগুলি ১ এপ্রিল থেকে বন্ধ। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে প্রায় একশোটি মদের দোকান ও পানশালা বন্ধ বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বনগাঁ শহরের ট বাজারের একটি মদের দোকান খুলে যায়। খবর পেয়ে সেখানে ভিড় জমে যায়। বনগাঁ শহরের মতিগঞ্জ এলাকায় বনগাঁ-বাগদা রাজ্য সড়কের পাশে রয়েছে মোনালিসা রেস্তোঁরা কাম বার। আদালতের নির্দেশে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নতুন নির্দেশে ওই এলাকাটি পুরসভার রাস্তার তকমা পেয়েছে। ফলে বুধবার দোকানে ধূপ ধুনো দিয়ে পুজো করা হয়। বৃহস্পতিবার থেকে ফের চালু হচ্ছে দোকানটি। বেশ কয়েকজন যুবক কাজ করেন ওই দোকানে। দোকান খোলায় তাঁরা খুশি। এক কর্মী বলেন, ‘‘নতুন সিদ্ধান্তের ফলে আমরা কর্মহীন হওয়া থেকে বেঁচে গেলাম। রাজ্য সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ ওই বার কর্তৃপক্ষের তরফে বিশু দাস বলেন, ‘‘প্রচুর টাকার মদ ছিল। দোকান খুলতে না পারলে প্রচুর টাকার ক্ষতি হতো।’’
তবে সাধারণ মানুষের বক্তব্য, রাজস্ব আদায়ের জন্য রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে এ ভাবে ঘুরপথে অমান্য করে যুব সমাজের ক্ষতি করল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy