গ্রামের চার বছরের ছোট্ট মেয়েটা ক্যান্সারে আক্রান্ত। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাকে সুস্থ করে তুলতে কয়েক লক্ষ টাকার দরকার।
কমলিকা সরকার নামে মেয়েটির বাবা কৌশিকবাবু মুরগির ব্যবসা করেন। মেয়ের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয় গাইঘাটার পাঁচপোতার ওই ব্যবসায়ীর পক্ষে। বর্তমানে কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকায় একটি বেসরকারি ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি কমলিকা। মেয়েকে কী ভাবে সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে আনবেন, তা ভেবে পাচ্ছেন না কমলিকার বাবা-মা।
পরিবারটির সমস্যর কথা জানতে পারেন স্থানীয় পাঁচপোতা ভারাডাঙা হাইস্কুলের শিক্ষক সন্দীপ ঘোষ। কমলিকার মা মামনি ওই স্কুলেরই প্রাক্তনী। সন্দীপবাবু স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কমলকৃষ্ণ মিস্ত্রির সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করেন। সকলে মিলে ঠিক হয়, কিছু একটা করতে হবে।
সেই মতো, স্কুলের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা প্রতিটি ক্লাসে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলছেন। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও সাহায্য করেছেন। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘এমন ফুটফুটে একটি মেয়ের জীবন নিভে যাবে, ভাবতে পারা যাচ্ছে না। তাই স্কুলের তরফে সামান্য আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে পরিবারটিকে।’’
মঙ্গলবার দুপুরে সন্দীপবাবু পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়ে কমলিকাদের বাড়িতে যান। মেয়েটির দিদিমা ননী দাসের হাতে কয়েক হাজার টাকা তুলে দেন। শিশুটির বাবা-মা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। তাঁরা মেয়েকে নিয়ে কলকাতায়। বাড়িতে রান্না-খাওয়া কার্যত বন্ধ। ননীদেবী বলেন, ‘‘ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নাতনির চিকিৎসার জন্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকা দরকার। আমাদের পক্ষে তা সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তবে স্কুলের থেকে সাহায্য পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ।’’
স্কুলের পাশাপাশি স্থানীয় কিছু যুবক ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যেরাও এগিয়ে এসেছেন। সংগঠনের সদস্য অরণ্য মণ্ডল জানিয়েছেন, নিজেরা সংগঠনের সদস্যেরা সাধ্যমতো আর্থিক সাহায্য করছেন। এলাকার বাজার-হাটে গিয়েও অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে। স্থানীয় ক্লাব, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিকেও জানানো হয়েছে। সকলে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সকলেই চাইছেন গ্রামের ছোট্ট মেয়েটা সুস্থ হয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরুক।