দুর্ঘটনায় জখম হয়ে পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে গিয়েছিলেন প্রৌঢ়া মা। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে দেখাশোনার বোঝা আর নিতে চায়নি ছেলে ও পুত্রবধূ। তাই প্রৌঢ়ার শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করে তারা। এর পরে পড়শি ও আত্মীয়দের জানায়, মা আত্মহত্যা করেছেন। শেষে অবশ্য তাদের সব কীর্তি ধরা পড়ে যায়। প্রৌঢ়াকে খুনের অভিযোগে তাঁর ছেলে ও বৌমাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা পুলিশের ভাঙড় ডিভিশনের পোলেরহাট থানা এলাকার বেঁওতা গ্রামে। মৃতার নাম কাজল মণ্ডল (৫৬)। তাঁকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ছেলে রাজু মণ্ডল ও পুত্রবধূ সোমা মণ্ডলকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে একটি দুর্ঘটনায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন কাজল। বিছানাতেই তাঁকে শৌচকর্ম করতে হত। প্রৌঢ়ার ছেলে রাজু পেশায় কাঠের মিস্ত্রি। তাঁর স্বল্প আয়ে চলত সংসার। রাজু দাবি করেছে, ওষুধ ও চিকিৎসার খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছিল সে। এ নিয়ে তার সঙ্গে স্ত্রীর নিত্য অশান্তি চলছিল। অসুস্থ সোমাও জানিয়ে দেয়, সে আর শাশুড়ির দেখাশোনা করতে পারবে না।
অভিযোগ, গত শুক্রবার রাতে নাইলনের দড়ি দিয়ে কাজলের শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করে রাজু ও সোমা। এর পরে আত্মহত্যার গল্প ফাঁদে। এতে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। কারণ, যিনি বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেন না, তিনি কী ভাবে আত্মঘাতী হবেন? খবর যায় পোলেরহাট থানায়। রাজু ও সোমাকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ভেঙে পড়ে খুনের কথা স্বীকার করে তারা।
পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে খুনের মামলা রুজু করেছে। মঙ্গলবার রাজু ও সোমাকে বারুইপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক দু’দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)