দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুই বিধায়কের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ, এলাকায় আসেন না। প্রায় মাস তিনেক ধরে স্থানীয় বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশ প্রার্থী বদলের দাবি করে আসছেন। একের পর এক বিক্ষোভ সভা হয়েছে। কিন্তু নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং জানিয়ে দিয়েছেন, রায়দিঘি কেন্দ্রে দেবশ্রী রায় ও সাতগাছিয়া কেন্দ্রে সোনালি গুহই প্রার্থী হবেন।
শুক্রবার সাতগাছিয়া ও রায়দিঘিতে সোনালি ও দেবশ্রীর নাম জানার পরে কার্যত হতাশ তৃণমূল নিচুতলার সেই নেতা-কর্মীরা। রায়দিঘির তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতার কথায়, ‘‘দিদি হয় তো প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। কিন্তু সারা বছর সাধারণ মানুষ থেকে দলীয় কর্মী— সকলকে তো আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। সেই কারণেই প্রার্থী বদল করার আবেদন করা হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা দেখা যাবে।’’
রায়দিঘি কেন্দ্রে সিপিএমের হেভিওয়েট প্রার্থী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘২০১১ সালের পরিস্থিতি নেই। সে সময়ে মহাজোট হয়েছিল। সাধারণ মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে ভোট দিয়েছিলেন। এ বার পরিস্থিতি কঠিন। তার উপরে প্রার্থী নিয়ে চারিদিকে অভিযোগ। তবে দলের যখন নির্দেশ, আমরা চেষ্টা করব।’’ দেবশ্রী অবশ্য আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘‘সব দলীয় কর্মী ও সাধারণ মানুষ আমার পাশে রয়েছেন।’’
অন্য দিকে, সাতগাছিয়ার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘গত পাঁচ বছর বিধায়কের কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। সাধারণ মানুষ কাকুতি-মিনতি করার পরেও বিধায়ক এলাকায় আসতেন না। আমরা এখন হতাশ। নির্বাচনের প্রচার কী ভাবে সামলানো হবে, তা বুঝতে পারছি না।’’ প্রচারের সময়ে প্রার্থীর আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার তৃণমূলের এক নেতার আশঙ্কা, ‘‘সাতগাছিয়া ও রায়দিঘির পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে পড়েছে। সিপিএম ও কংগ্রেসের জোট হওয়ায় বিক্ষুব্ধেরা তলায় তলায় জোটের দিকে চলে যেতে পারেন। প্রার্থী নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে শুধু দলীয় কর্মী নয়, সাধারণ ভোটাররাও জোটের স্থানীয় প্রার্থীদের সমর্থন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে পারে।’’
দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নাম ঘোষণার পরে সোনালি ও দেবশ্রী নিজেদের এলাকার বিক্ষুব্ধ কয়েক জন নেতাকে ফোন করে সাড়া পাননি। কেউ ফোন তোলেননি, কেউ ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন কেটে দিয়েছেন।
সোনালি অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতোই কাজ করছি। আমার পাশে মানুষ আছেন। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তবে তা মিটেও গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy