E-Paper

উত্তরে উদ্ধার বহু শব্দবাজি, বারুদের জোগান নিয়ে প্রশ্ন

সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়ে কয়েকশো কেজি নিষিদ্ধি বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৩ ১০:১৩
নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে শব্দবাজি। আমডাঙার সন্তোষপুরের ফাঁকা মাঠে।  ছবি: সুদীপ ঘোষ

নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে শব্দবাজি। আমডাঙার সন্তোষপুরের ফাঁকা মাঠে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

এগরার ক্ষত শুকোতে না শুকোতে বজবজ। বাজি দুর্ঘটনায় মৃত্যু-মিছিল চলছেই। এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে আছে বেআইনি বাজি কারখানা। কালীপুজোর সময় অথবা কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে নানা জায়গায় পুলিশ অভিযান চালায়। বাজি বাজেয়াপ্ত, ধরপাকড় করা হয়। কিন্তু, বাজি উৎপাদন বন্ধ হয় কই!

সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়ে কয়েকশো কেজি নিষিদ্ধি বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। হাড়োয়ার রাখালপল্লি ও শালিপুর গ্রাম থেকে প্রায় ৩০০ কেজি বাজি ও বাজির মশলা উদ্ধার করেছে পুলিশ। অবৈধ ভাবে বাজি ও মশলা মজুত করার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাবড়া থানার পুলিশও প্রায় ২০০ কেজি বাজি উদ্ধার করে। এর মধ্যে হাবড়া বাজার থেকেই মেলে প্রায় ৪৯ কেজি বাজি। আমডাঙা থানার হামিদপুর থেকে প্রায় ৩১ কেজি নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার হয়। পরে তা পুলিশের পক্ষ থেকে আমডাঙার সন্তোষপুরের একটি ফাঁকা মাঠে নিষ্ক্রিয় করা হয়। দত্তপুকুরের নীলগঞ্জ ইছাপুর পাঞ্চায়েতের কাঠুরিয়া থেকে ১০ টনের বেশি বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক জায়গায় বাজি তৈরি হলেও জেলায় এ দিন সে ভাবে বাজি উদ্ধার হয়নি। বিভিন্ন থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু ধারাবাহিকতা কতদিন থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় গত ১৬ মে বাজি-বিস্ফোরণে ৯ জন মারা যান। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্যের পরিবেশ দফতরের প্রধান সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, এডিজি (সিআইডি), দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য সচিব, যুগ্ম বিস্ফোরক কন্ট্রোলারকে চিঠি দিয়েছে হুগলির চন্দননগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’। বিপুল পরিমাণ বারুদ সরবরাহ এবং মজুত করা নিয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়েছে তারা। বারুদ তৈরি, পরিবহণ বা মজুতের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। বারুদ থেকে বাজি তৈরিতেও আইনি অনুমতি প্রয়োজন। সে সব কতটা মা‌না হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ওই সংগঠন।

সংগঠনের সভাপতি তথা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, তিনি বাজি প্রস্তুতকারকদের কাছে জেনেছেন, চিন থেকে জলপথে এবং তামিলনাড়ুর শিবকাশি থেকে সড়কপথে এখানে বারুদ আসে। তার পরে ছড়িয়ে পড়ে কারবারিদের হাত ধরে। তিনি বলেন, ‘‘কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে কিছু বাজি বাজেয়াপ্ত করে দায় ঝাড়লেই হবে না, বিপুল পরিমাণ বারুদ কোথা থেকে আসে, কোথায় মজুত হয়, তা দেখে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’

গরু-কয়লা পাচার নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি সরগরম। বারুদের মতো পদার্থ কী ভাবে রাজ্যের সীমানা পার করছে, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।

বাজেয়াপ্ত বাজি নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ওই সংগঠন। তাদের আর্জি, বাজেয়াপ্ত বাজি বিধি মেনে বিশেষ গাড়িতে হলদিয়ায় নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে গিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নিষ্ক্রিয় করতে হবে। বারুদের মধ্যে ক্লোরেট, বেরিয়াম, সিসা, লোহা, পটাশিয়াম প্রভৃতি ভারী ধাতু থাকে। যেখানে-সেখানে নিষ্ক্রিয় করলে বিস্ফোরণের আশঙ্কা যেমন থাকে, পরিবেশও মারাত্মক দূষিত হয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Gun Powder Egra Blast

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy