Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Mid Day Meal

ধারদেনা করে পড়ুয়াদের পাতে দেওয়া হচ্ছে ভাত

খানসাহেব আবাদ হাইস্কুলে মিড ডে মিল পাওয়া পড়ুয়ার সংখ্যা ৬৩৮ জন। স্কুল সূত্রের খবর, অনেক গরিব পরিবারের ছেলেমেয়ে মিড ডে মিলের উপরে ভরসা করে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সমরেশ মণ্ডল
সাগর শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৫৮
Share: Save:

মিড ডে মিলে বরাদ্দ এমনিতেই কম। যতটুকু বাড়ল, তাতে কিছুই সুরাহা হবে বলে মনে করছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষেরা।

দীর্ঘদিন ধরেই পড়ুয়াদের খাবার জোগাতে হিমসিম খাচ্ছে স্কুলগুলি। মিড ডে মিলের সঙ্গে যুক্ত অনেকের দাবি, পড়ুয়াদের মুখে এক বেলা ঠিক মতো পুষ্টিকর খাবার তুলে দিতে গেলে মাথাপিছু অন্তত ২০ টাকা প্রয়োজন বলে মত অনেকেরই। সেখানে মিলছে তার মাত্র এক চতুর্থাংশ। কী ভাবে এই সামান্য টাকায় খাবার পাচ্ছে পড়ুয়ারা? স্কুল সূত্রের খবর, প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে চাল, ডাল, তেল, আনাজের দাম। বেড়েছে জ্বালানির খরচ। এই পরিস্থিতিতে সরকারি মেনু অনুযায়ী মিড ডে মিল খাওয়াতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নিতে হচ্ছে নানা পথ।

সাগরের প্রত্যন্ত এলাকার বিভিন্ন স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পরিস্থিতি সামাল দিতে কোথাও মিড ডে মিলে খাবারের পরিমাণ কমানো হয়েছে। কোথাও আবার পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ আছে। বাজার থেকে না কিনে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে আনাজ কিনছে কোনও কোনও স্কুল। এতে কিছুটা কম খরচ পড়ছে। কোথাও আবার পরিস্থিতি সামাল দিতে স্কুলেই নানা আনাজ চাষের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সাগরের বামনখালি এমপিপি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌমিত্র দাস বলেন, “স্কুলে ৬০০ জন ছাত্রছাত্রীকে খাবার দিতে হয়। বরাদ্দ অর্থে মিড ডে মিল দেওয়া সম্ভবই নয়। মাঝে মধ্যে মেনু থেকে সয়াবিন বাদ দিতে হয়। বাজার থেকে আনাজ না কিনে চাষিদের থেকে কেনা হয়। তাতে কিছুটা সাশ্রয় হয়।” সম্প্রতি বরাদ্দ যা বেড়েছে, তাতে লাভ হবে না বলেই জানাচ্ছেন তিনি।

খানসাহেব আবাদ হাইস্কুলে মিড ডে মিল পাওয়া পড়ুয়ার সংখ্যা ৬৩৮ জন। স্কুল সূত্রের খবর, অনেক গরিব পরিবারের ছেলেমেয়ে মিড ডে মিলের উপরে ভরসা করে। কিন্তু বরাদ্দ টাকায় ভাল খাবার দেওয়া সম্ভব হয় না। মাঝে মধ্যেই খাবারের মান কমিয়ে দিতে হয়। এক টাকারও কম বরাদ্দ বৃদ্ধিতে লাভ হবে না বলেই মত কর্তৃপক্ষের। শিকারপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৬৮। মিলের দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দাবি, বরাদ্দ এই টাকায় চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ধার করে মিড ডে মিল চালাতে হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মানস দাস বলেন, “যা বাজারমূল্য, তাতে সরকারি মেনু মেনে মিড ডে মিল দেওয়া সম্ভব নয়। দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠী বাজারে ধার করছে। যা বরাদ্দ বেড়েছে, তাতে কিছুই লাভ হবে না।” অনেকে জানান, খাবারের মান কমায় মিড ডে মিল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অনেক পড়ুয়াই। এ রকম চলতে থাকলে অপুষ্টির সমস্যা বাড়বে বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা। স্কুলছুটের সংখ্যাও বাড়ার আশঙ্কা তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mid Day Meal Sagar Island
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE