হাবিবুর রহমান মোল্লা
বাড়িতে ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হাবিবুর রহমান মোল্লা। বাড়ির লোকের দাবি, রহমান তাঁদের বলেছিলেন, যত্ন করে খাইয়েছিল পরিচিত এক জন। এবং তাঁর দেওয়া ঠান্ডা পানীয় খাওয়ার পরেই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন তিনি। বছর আঠারোর ছেলেটিকে নিয়ে যখন পৌঁছনো হয় মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে, চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, রহমান আর বেঁচে নেই!
এই ঘটনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃত তরুণের পরিবার-পরিজন। তাঁদের অভিযোগ, বড়লোক বাড়ির কিশোরী মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল রহমানের। কিন্তু, তাঁদের আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভাল না হওয়ায় সম্পর্ক মেনে নিতে রাজি ছিল না মেয়ের পরিবার। সে জন্যই মেয়ের জ্যাঠতুতো দাদার বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে খুন করা হয়েছে রহমানকে।
ওই কিশোরীর বাবা, জ্যাঠা ও জ্যাঠতুতো দাদার বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ করেছেন রহমানের বাবা আবুল হোসেন মোল্লা। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে মিনাখাঁর মালঞ্চের মোল্লাপাড়ায়। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা রবিবার বিকেলে বাসন্তী রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান।
কিশোরীর বাবা অবশ্য রহমানকে বাড়িতে ডেকে খাওয়ানোর কথা মানতেই চাননি। তাঁর মেয়ের সঙ্গে রহমানের কোনও সম্পর্ক ছিল বলেও অস্বীকার করেন তিনি।
তাঁর দাবি, “আমার মেয়ের সঙ্গে ওই ছেলেটির প্রেম ছিল বলে তো কখনও শুনিনি। তা ছাড়া, একটা ছেলেকে হঠাৎ নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানোরও কোনও প্রশ্ন ওঠে না। এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের অকারণেই জড়ানো হচ্ছে।” স্থানীয় থানার ওসি অয়ন মণ্ডল বলেন, “ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট ভাবে জানা যাচ্ছে না। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
মৃত রহমানের বাবা আবুল হোসেন মোল্লা পেশায় দিনমজুর। তাঁর চার ছেলের মধ্যে ছোট রহমান। আবুল হোসেন পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে ওই মেয়েটির বছর দু’য়েক ধরে সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির জ্যাঠার কাপড় ছাপার কারখানায় কাজ করতেন রহমান। আবুল হোসেনের আরও দাবি, সম্প্রতি রহমানের সঙ্গে মেয়েটির রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়ে গিয়েছে বলে গ্রামে চাউর হয়ে যায়। গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, দিন কয়েক আগে এ নিয়ে দু’টি পরিবারের মধ্যে ঝগড়াঝাটিও হয়েছিল। রহমানের পরিবার-পরিজনের দাবি, শনিবার দুপুরে তাঁকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ান মেয়েটির বাবা। তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই তরুণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy