E-Paper

রেললাইনে থমকে পড়া দম্পতিকে সরানোর চেষ্টা ফলবিক্রেতার, মৃত্যু তিন জনেরই

মৃত দম্পতি তমাল কর (৩৯) এবং মৌমিতা সরকার (৩৬) কলকাতার শোভাবাজারের হাটখোলা এলাকার বাসিন্দা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৪৫
ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই দম্পতির।

ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই দম্পতির। —প্রতীকী চিত্র।

পঞ্চমীর রাতে পুজো দেখে ফেরার পথে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক দম্পতির। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম এক ফল বিক্রেতারও পরে মৃত্যু হয়। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে শ্যামনগর স্টেশন সংলগ্ন ২৩ নম্বর রেলগেটের কাছে। রেল পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত দম্পতি তমাল কর (৩৯) এবং মৌমিতা সরকার (৩৬) কলকাতার শোভাবাজারের হাটখোলা এলাকার বাসিন্দা। শ্যামনগরের গুড়দহে মৌমিতার মা-বাবা থাকেন। কিছু দিন ধরে মৌমিতারা সেখানেই ছিলেন। শনিবার বেশ কিছু পুজো দেখে তাঁরা গুড়দহে ফিরছিলেন রাত ১২টা নাগাদ। সেই সময়ে আপ বালুরঘাট এক্সপ্রেস দ্রুত গতিতে শ্যামনগরস্টেশনের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকছিল। রেলগেটের কাছেই শেষ হচ্ছে ওই প্ল্যাটফর্ম। বন্ধ রেলগেটের ওই অংশ দিয়েই তড়িঘড়ি পার হওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে লাইনে পড়ে যান মৌমিতা। স্ত্রীকে তুলতে গিয়ে ওই লাইনে প্রবল গতিতে ট্রেন ঢুকতে দেখে ঘাবড়ে যান তমাল। রেল গেটে আটকে থাকা লোকজন তখন চিৎকার করতে থাকেন। রেললাইনের ধারে বসা, সুব্রত রায় নামে এক ফল বিক্রেতা ছুটে গিয়ে দু’জনকে টেনেসরানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু ট্রেনের কাউক্যাচারের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন তিন জনই। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই দম্পতির।

কাউগাছির বাসিন্দা সুব্রতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বন্ধ রেলগেট খোলার দাবি জানান স্থানীয়েরা। কিন্তু অন্য ট্রেন আসবে বলে রেলগেট না খোলায় রেলকর্মীদের সঙ্গে বচসা বাধে স্থানীয়দের। কোনও রকমে গেটের তলা দিয়ে সুব্রতকে বার করে টোটোয় চাপিয়ে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তত ক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা ২৩ নম্বর গেটে রেললাইনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা অভিযোগ করেন, গেট খুলে তাড়াতাড়ি সুব্রতকে হাসপাতালে নিয়ে পৌঁছতে পারলে তাঁকে বাঁচানো যেত। স্থানীয় বাসিন্দা শুভরঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সুব্রত তখন কাতরাচ্ছিল। আমরা রেলগেটের কর্মীকে বলি গেট খুলতে, টোটো ঢোকানোর জন্য। যাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু রেলগেট খোলা হয়নি। তাই নিজেরা ওঁকে তুলে কোনও মতে রেলগেট পেরিয়ে হাসপাতালে যাই। কিন্তু দেরি হয়ে যাওয়ায় ওঁর মৃত্যু হয়।’’

জগদ্দল থানা ও নৈহাটি জিআরপি থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রেলের আধিকারিকেরাও পৌঁছন। রাতের দিকে ট্রেন কম থাকায় যাত্রী দুর্ভোগ বেশি না হলেও এই ঘটনা নিয়ে রেলের উদাসীনতার দিকে আঙুল তোলেন বিক্ষোভকারীরা। রেল পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, বন্ধ রেলগেট পারাপারে বার বার বারণ করা হলেও অনেকেই শোনেন না। পুজোর ভিড়ে এই নিয়ম ভাঙার সংখ্যা বাড়ছে। এই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Barrackpore Death Case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy