তল্লাশি চালাচ্ছেন বনদফতরের কর্মীরা। ঝড়খালিতে। নিজস্ব চিত্র
পুজোর আগে বাঘের আতঙ্কে ভুগছে সুন্দরবনের ঝড়খালির ৪ নম্বর নেহরুপল্লি। ওই গ্রামের আশপাশের বেশ কয়েকটা গ্রামের মানুষও বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই এই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ঝড়খালি ৪ নম্বর নেহরুপল্লি গ্রামের বাসিন্দা পেশায় মৎস্যজীবী অঞ্জনা মণ্ডল বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলের পথ ধরে হেড়োভাঙা নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরতে যাচ্ছিলেন। সেখানে যাওয়ার পথেই তিনি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে বাঘের টাটকা পায়ের ছাপ দেখতে পান। সেই পায়ের ছাপ দেখে আতঙ্কিত হয়ে তিনি ফিরে আসেন গ্রামে। খবর দেন গ্রামের অন্যদের। এরপর গ্রামবাসীরা স্থানীয় ঝড়খালি কোষ্টাল থানা ও বন দফতরের ঝড়খালি বিট অফিসে খবর দেন। খবর পেয়েই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ ও বনকর্মীরা চলে আসেন ঘটনাস্থলে। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় কেউই আর সাহস করে জঙ্গলে নামেননি। তবে সারা রাত ওই এলাকায় পাহারার ব্যবস্থা করা হয়। বন দফতরের কর্মী, গ্রামবাসী সকলে মিলেই নদীর পাড়ে পাহারা দেন। বাঘ যাতে গ্রামে না ঢোকে সেই কারণে পটকাও ফাটানো হয়।
শুক্রবার ভোরের আলো ফুটতেই গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে বাঘের খোঁজে নেমে পড়েন বনকর্মীরা। ৪ নম্বর নেহরুপল্লি ও আশপাশের গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলগুলিতে চলে বাঘের খোঁজ। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরেও বাঘের কোনও খোঁজ পাননি বনকর্মীরা। এমনকী বাঘের পায়ের ছাপও চোখে পড়েনি তাঁদের। তাঁদের দাবি, হেড়োভাঙা জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে নদী সাঁতরে বাঘ ঝড়খালির নেহরুপল্লি লাগোয়া জঙ্গলে এলেও পরে চলে গিয়েছে। তবে বাঘের আসা ও চলে যাওয়ার পায়ের ছাপের খোঁজ চালানো হচ্ছে। কিন্তু পুজোর আগে গ্রামে বাঘ আতঙ্কে যথেষ্ট আতঙ্কিত এলাকার সাধারণ মানুষ।
অঞ্জনা বলেন, “ক’দিন বাদেই পুজো। একটু বাড়তি রোজগারের আশায় দু’বেলা নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরতে যাচ্ছি। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ দেখার পর ভয়ে বাড়ি ফিরে আসি। আর যাইনি মাছ ধরতে।’’
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই গ্রামে বাঘ ঢোকার কথা লোক মুখে প্রচার হয়েছে এলাকায়। ফলে অঞ্জনার মত অনেকেই আতঙ্কে মাছ কাঁকড়া ধরতে যাননি শুক্রবার। স্থানীয় বাসিন্দা তপতী মণ্ডল বলেন, “গ্রামে বাঘ ঢোকার খবর পেয়ে আমরা যথেষ্ট আতঙ্কিত। বেশির ভাগ সময় সন্তানদের নিয়ে ঘরের মধ্যে রয়েছি।’’ যদিও বন দফতরের তরফ থেকে গ্রাম লাগোয়া এলাকায় বাঘ ঢোকার কথা স্বীকার করা হয়নি। তাঁদের দাবি, গ্রামবাসীদের কথা অনুযায়ী তল্লাশি চলছে। যতক্ষণ পায়ের ছাপ বা অন্য কোনও প্রমাণ না পাওয়া যাচ্ছে ততক্ষণ কিছুই বলা যাচ্ছে না। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিভাগীয় বন আধিকারিক সন্তোশা জে আর বলেন, “একটা খবর পেয়ে বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত গ্রামে বাঘ ঢোকার কোনও
প্রমাণ মেলেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy