শেষ-শ্রদ্ধা: নিহত নেতার পাশে তৃণমূল নেতৃত্ব। ছবি: নির্মল বসু
সভা শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে কুপিয়ে খুন করা হল প্রবীণ তৃণমূল নেতাকে।
সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সন্দেশখালির জয়গোপালপুরে। নিহত অরবিন্দ করন (৭২) দলের কার্যকরী অঞ্চল সভাপতি ছিলেন। প্রাক্তন শিক্ষক মানুষটি এলাকায় জনপ্রিয় ছিলেন। বাড়ির কাছেই তাঁকে কোপায় দুষ্কৃতীরা। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে দুই সন্দেহভাজন। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে ১০ জনের নামে। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনন্দ সরকার বলেন, ‘‘বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।’’
খুনের ঘটনায় বিজেপি এবং সিপিএমকে দায়ী করেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মঙ্গলবার বিকেলে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে এসেছিলেন তিনি। নিহত নেতার দেহ দলের পতাকা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। জ্যোতিপ্রিয়বাবুর সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস, জেলা পরিষদ সদস্য কৃষ্ণগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়, বসিরহাট ও টাকির পুরপ্রধান তপন সরকার, সোমনাথ মুখোপাধ্যায়েরা। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের দখল নিতে বিজেপি এবং সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জনপ্রিয় এই নেতাকে খুন করেছে।’’ বিজেপি নেতৃত্বের উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁর অভিযোগ।
সিপিএমের জেলা নেতা তথা সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই এ জন্য দায়ী করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘জয়গোপালপুরে আমাদের তেমন সংগঠনই নেই। নরমপন্থী শিক্ষক মানুষ অরবিন্দবাবু স্পষ্ট কথা বলতেন। তাই দলের চরমপন্থীরা ওঁকে খুন করেছে।’’ একই বক্তব্য বিজেপির জেলা সভাপতি বিকাশ সিংহেরও। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলে ভাল মানুষের জায়গা নেই বলেই মাস্টারমশাইকে সরিয়ে দেওয়া হল।’’
পুলিশ জানায়, সন্দেশখালির মণিপুর পঞ্চায়েতের জয়গোপালপুর গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ছিলেন অরবিন্দবাবু। সোমবার সন্ধ্যায় যান দলের সভায়। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ জয়গোপালপুরে ফেরেন। স্থানীয় ত্রিবেণী মোড় থেকে একাই হেঁটে বাড়ির পথ ধরেন অরবিন্দবাবু।
পুলিশ জানায়, টর্চ জ্বেলে হাঁটছিলেন প্রবীণ নেতা। বাড়ি থেকে কয়েকশো গজ আগে পিছন দিক থেকে কয়েকজন দুষ্কৃতী মোটরবাইকে এসে তাঁর পথ আটকায়। সেখানে আগে থেকেই আরও কয়েকজন দুষ্কৃতী গা ঢাকা দিয়ে ছিল। সকলে মিলে ওই নেতার উপরে টাঙ্গি, দা, শাবল দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
কাছেই এক বাড়িতে কীর্তনের আসর বসেছিল। অরবিন্দবাবুর আর্তনাদ শুনে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে কিছু লোক। ততক্ষণে অবশ্য দুষ্কৃতীরা পালিয়েছে। নৌকোয় তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান তিনি। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অরবিন্দবাবুর বাড়ির কাছে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy